ভিডিও স্ট্রিমিং প্ল্যাটফরম ইউটিউবে আপত্তিকর কমেন্টকারীদের বিরুদ্ধে এবার ব্যবস্থা নেবে প্রতিষ্ঠানটি। কুরুচিকর মন্তব্য করলেই সতর্কবার্তা…
ইউরোপের বাজারে শাওমির উত্থানের নেপথ্যে
নিউজ ডেস্ক:
ইউরোপের বাজারে শাওমির সাম্প্রতিক উত্থানের বিষয়টি অস্বীকারের উপায় নেই। স্মার্টফোন বিক্রির দিক থেকে চলতি বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে স্যামসাংকে হটিয়ে শীর্ষস্থান দখল করে শাওমি। ২০১৭ সালের নভেম্বরে ইউরোপের বাজারে প্রবেশ করে এমন অর্জন বেশ চিত্তাকর্ষক হলেও সংশ্লিষ্ট উপাত্ত বিশ্লেষণ করে কাউন্টারপয়েন্ট রিসার্চ বলছে, ইউরোপের তিনটি অঞ্চলে শীর্ষ তিন স্মার্টফোন নির্মাতা কোম্পানির আধিপত্য।
প্রাথমিক উপাত্তে মনে করা হচ্ছিল, পূর্ব ইউরোপ ও সিআইএসভুক্ত (কমনওয়েলথ অব ইনডিপেনডেন্ট স্টেটস) দেশগুলোতে শীর্ষস্থানে রয়েছে শাওমি। কিন্তু চূড়ান্ত উপাত্তে দেখা যাচ্ছে পূর্ব ইউরোপে এখনো শীর্ষস্থান ধরে রেখেছে দক্ষিণ কোরিয়াভিত্তিক স্যামসাং। শীর্ষ তিন স্মার্টফোন ব্র্যান্ড তিনটি অঞ্চলে শীর্ষস্থান অর্জন করেছে; পশ্চিম ইউরোপে অ্যাপল, পূর্ব ইউরোপে স্যামসাং এবং রাশিয়া ও সাবেক সোভিয়েতভুক্ত সিআইএস দেশগুলোতে শাওমি।
আকারের দিক থেকে বিশ্বের বৃহত্তম দেশটি ইউরোপেরও বৃহত্তম স্মার্টফোন বাজার। ইউরোপে দ্বিতীয় বৃহত্তম স্মার্টফোন বাজার জার্মানির চেয়ে প্রায় দ্বিগুণ স্মার্টফোন বিক্রি হয় রাশিয়ায়। রাশিয়া ও সিআইএসকে ধরলে ইউরোপে সর্বোচ্চ স্মার্টফোন বিক্রেতা শাওমি। কিন্তু রাশিয়াকে হিসাব থেকে বাদ দিলেও এখনো শীর্ষস্থান স্যামসাংয়ের।
কাউন্টারপয়েন্ট রিসার্চের অ্যাসোসিয়েট ডিরেক্টর জ্যান স্ট্রাইজ্যাক বলেন, ইউরোপ খুব বৈচিত্র্যময় অঞ্চল। এখানে খুবই অগ্রসর বাজারের সঙ্গে সঙ্গে উদীয়মান বাজারও রয়েছে। এজন্য বিভিন্ন অঞ্চলে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের আধিপত্য দেখা যায়। স্মার্টফোন ব্র্যান্ডগুলোর মধ্যে বিস্তৃত পোর্টফোলিওর স্যামসাং এতদিন ইউরোপের বাজারে নেতৃত্বের আসনে ছিল। কিন্তু করোনা মহামারীর কারণে স্যামসাংয়ের বিভিন্ন কারখানা বন্ধ থাকায় চলতি বছরের মে ও জুনে স্মার্টফোন সরবরাহ বিঘ্নিত হয়েছে। চ্যালেঞ্জের মুখে পড়লেও ইউরোপের বাজারে বেশ শক্তিশালী স্যামসাং। উদাহরণস্বরূপ, দ্বিতীয় প্রান্তিকে পোল্যান্ডের বাজারে বিক্রি হওয়া ৪২ শতাংশ স্মার্টফোনই ছিল স্যামসাংয়ের। ইতালি, গ্রিস, নেদারল্যান্ডও, নরওয়ে, পর্তুগাল ও রোমানিয়ার মতো দেশগুলোতেও শীর্ষ ব্র্যান্ড এটি।
দামি ব্র্যান্ড হিসেবে পশ্চিম ইউরোপে বেশ শক্তিশালী অবস্থান আইফোনের। যেমন চলতি বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে যুক্তরাজ্যে বিক্রি হওয়া স্মার্টফোনের ৪৪ শতাংশই ছিল অ্যাপলের। অস্ট্রিয়া, ফ্রান্স, জার্মানি, হাঙ্গেরি, সুইডেন ও সুইজারল্যান্ডের মতো ধনী দেশগুলোতে শীর্ষ ব্র্যান্ড অ্যাপলের আইফোন।
গত ১২ থেকে ১৮ মাসের মধ্যে শাওমির উত্থানের পেছনে আসলে বড় অবদান হুয়াওয়ের পতন। মূলত দাম সংবেদনশীল বাজারগুলোতে শক্তিশালী অবস্থান নিয়েছে শাওমি। দ্বিতীয় প্রান্তিকে স্পেনে বিক্রীত মোট স্মার্টফোনের ৪০ শতাংশ ছিল শাওমির। এছাড়া বেলজিয়াম, ডেনমার্ক, রাশিয়া ও ইউক্রেনের বাজারে শীর্ষস্থান চীনা স্মার্টফোন জায়ান্টটির।
তৃতীয় প্রান্তিক নিয়ে কাউন্টারপয়েন্ট রিসার্চের স্ট্রাইজ্যাকের পূর্বাভাস, ভিয়েতনামে কারখানা পুরোদমে সচল হওয়ায় ইউরোপে শীর্ষস্থান পুনরুদ্ধার করবে স্যামসাং। মাঝারি দামের এ সিরিজের ফোনগুলো ইউরোপে বেশ ভালো অবস্থান অর্জন করেছে। নতুন ফোল্ডেবল ফোন বাজারে আনার মাধ্যমে প্রিমিয়াম ফোনের বাজারেও শক্তিশালী অবস্থান পাবে স্যামসাং। তদুপরি স্পেন ও রাশিয়ার মতো বাজারগুলোতে শীর্ষস্থান থাকবে শাওমির। পশ্চিম ইউরোপেও সহসাই শীর্ষস্থান হারাবে না অ্যাপল। সব মিলিয়ে আগামী দিনগুলোতে ইউরোপে শীর্ষ তিন স্মার্টফোন বিক্রেতা কোম্পানির মধ্যকার লড়াই বেশ জমে উঠবে বলেই মনে হচ্ছে।
This Post Has 0 Comments