নিউজ ডেস্ক: দেশে ক্রমবর্ধমান ই-কমার্স খাতে জবাবদিহিতা প্রতিষ্ঠা ও প্রতারণা ঠেকাতে একটি নিয়ন্ত্রণকারী কর্তৃপক্ষ গঠনের…
এবার অনলাইনে বিলাসবহুল ঘড়ি নির্মাতারাও
নিউজ ডেস্ক:
সুইস ঘড়ি নির্মাতাদের কিন্তু অনলাইন প্ল্যাটফর্ম তেমন একটা পছন্দ নয়, তারা চান বিক্রয়কেন্দ্রে এসে দেখে-বুঝে ঘড়ি কিনবেন ক্রেতা। তবে, করোনাভাইরাস বাস্তবতা পাল্টে দিয়েছে সে চিত্র। সর্বশেষ পণ্য দেখাতে ও করোনা সঙ্কটে কমে যাওয়া বিক্রি পুনরুদ্ধারে অনলাইনে এসে হাজির হয়েছেন সুইজারল্যান্ডের বিলাসবহুল ঘড়ি নির্মাতারা।
রয়টার্স এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে, ওয়াচবক্স বা রিচমন্ট’স ওয়াচফাইন্ডারের মতো প্ল্যাটফর্মগুলো প্রমাণ করে দিয়েছে যে অনলাইনেও বিলাসবহুল ঘড়ি কেনাবেচা করা সম্ভব। সুইস ঘড়ি বিক্রির বাজারে গত বছরই প্রভাবে ফেলেছে করোনাভাইরাস। ঘড়ি ব্র্যান্ডগুলোকে নিজ নিজ ছোট পরিসরের অনলাইন উপস্থিতি বাড়াতে এবং নিজেদের ডিজিটাল কর্মকাণ্ড পুনরায় ভাবতে বাধ্য করেছে গোটা বিষয়টি। বিলাসবহুল পণ্য নির্মাতা হার্মেসের নির্বাহী ভাইস প্রেসিডেন্ট গুইলাউমে ডে সেইনেস জানিয়েছেন, ক্রেতারা হার্মেস ডটকম থেকে কেনাকাটা করায় গত বছর তাদের ঘড়ি ব্যবসা ভালো করেছে। হার্মেস চামড়ার তৈরি পণ্য, রেশমী স্কার্ভস এবং সুগন্ধীর জন্য সুপরিচিত। অন্যান্য ঘড়ি নির্মাতার তুলনায় অনেক আগেই ই-কমার্স নির্ভর ব্যবসা শুরু করেছে তাদের প্রতিষ্ঠান। প্রায় ২০ বছর আগেই যুক্তরাষ্ট্রে নিজেদের লেনদেন ওয়েবসাইট নিয়ে এসেছে প্রতিষ্ঠানটি।
ডে সেইনেস জানিয়েছেন, গ্রুপের এ বছরের ঘড়ি বিক্রির বদৌলতে দৃঢ়ভাবে ঘুরে দাঁড়ানোর প্রত্যাশা করছেন তিনি। ভন্টোবেলের বিশ্লেষক রেনে ওয়েবার অনুমান করছেন, মূল্যের বিচারে সুইস ঘড়ি বিক্রির মাত্র দুই শতাংশ অনলাইনে হয়। তবে, অনলাইনের এ ব্যাপারটি আবার ব্র্যান্ড ভেদে একেক রকম হয়। অন্যান্য বিশ্লেষকদের মতে, অনলাইন বিক্রির পরিমাণ আনুমানিক সাত শতাংশ থেকে নয় শতাংশ। প্যাটেক ফিলিপ এবং রোলেক্সের মতো অধিকাংশ বিলাসবহুল ঘড়ি ব্র্যান্ডের গতানুগিতক বিক্রয়কেন্দ্রই পছন্দ। এখনও অনলাইনে আসতে রাজি নয় প্যাটেক ফিলিপ। খুচরা বিক্রেতাদের সঙ্গে মিলে প্রথম লকডাউনে ব্যাপারটি পরীক্ষা করে দেখার পর এ কৌশল অবলম্বনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে তারা।
এ প্রসঙ্গে প্রতিষ্ঠানটির তৃতীয় প্রজন্মের প্রেসিডেন্ট টিয়েরি স্টার্ন বলেছেন, “মানুষ প্যাটেক অনলাইন থেকে কিনতে চায় না, এ ঘড়িগুলো দামী, আপনি সৌন্দর্য্য এবং জাদু হারাচ্ছেন এতে।” গত বছরের তুলনায় অবশ্য কিছুটা ভালো অবস্থানে রয়েছে পারিবারিক-মালিকানাধীন এ ব্যবসাটি। ২০২০ সালে বিক্রি ২০ শতাংশ কমে যেত দেখেছিল তারা। তবে, সহসাই ২০১৯ সালের অবস্থানে ফিতে পারবে না প্যাটেক। তাই হয়তো স্টার্ন বলছেন, “এজন্য আরও এক বা দুই বছর সময় লাগবে।”
অন্যদিকে, আগামীতে ওয়াচেস অ্যান্ড ওয়ান্ডারস মেলায় অংশ নিতে ছোট স্বাধীন ব্র্যান্ড এইচ. মোজার অ্যান্ড সি’ ডিজিটাল প্রযুক্তিতে বিনিয়োগ করছে। বাস্তব বিশ্বের মেলার চেয়ে ভার্চুয়াল মেলায় খরচ কম দেখে সন্তুষ্ট তারা। ওয়াচেস অ্যান্ড ওয়ান্ডার্স নিজেদের ওয়েবসাইটে বলছে, এখন পর্যন্ত অনলাইনে হওয়া ঘড়ি সম্পর্কিত আয়োজনের মধ্যে এটিই সবচেয়ে বড়। এতে অংশ নেবে ৩৮টি ব্র্যান্ড, নিজেদের পণ্য তুলে ধরবে গণমাধ্যম ও খুচরা বিক্রেতাদের সামনে।
অরিস সহ-প্রধান নির্বাহী রোলফ স্টাডার বলেছেন, “ভোক্তারাও ওয়াচেস অ্যান্ড ওয়ান্ডার্স প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে অংশ নিতে পারলে ভালো হতো।” তিনি আরও জানান, মহামারীর সময়ে অরিস বিভিন্নভাবে নিজ ক্রেতাদের সঙ্গে আরও নিবিড়ভাবে যোগাযোগ করেছে। স্থানীয় তারকাদের নিয়ে গত বছর ইনস্টাগ্রামে ক্যাম্পেইন পরিচালনা থেকে শুরু করে জুমের মাধ্যমে সরাসরি অনলাইন কমিউনিটির কাছে ঘড়ি নিয়ে আসার বিষয়টিও তুলে ধরেছেন তিনি।
This Post Has 0 Comments