নিউজ ডেস্ক:
গ্রাহকদের অজান্তে মোবাইল ব্যালেন্স থেকে অপারেটরদের বিরুদ্ধে টাকা কেটে নেওয়ার অভিযোগ বেশ পুরনো। বহুবার এ ধরনের অভিযোগ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থায় এলেও তা প্রমাণ হচ্ছিলো না। অবশেষে বিটিআরসি অভিযোগগুলোর মধ্যে বেশ কয়েকটি ঘটনার সত্যতার প্রমাণ পেয়েছে।

একটি বিশেষ জরিপের মাধ্যমে কমিশন প্রমাণ পেয়েছে, মোবাইল গ্রাহকের কোনও ধরনের সম্মতি ছাড়াই বিভিন্ন ধরনের ভাস (ভ্যালু অ্যাডেড সার্ভিসেস) সেবা চালু করে ব্যালেন্স থেকে টাকা কেটে নিয়েছে।

প্রমাণ পেয়েই কঠোর অবস্থান নিয়েছে বিটিআরসি। বিটিআরসির মিডিয়া উইং বিভাগ থেকে অপারেটরগুলোকে নির্দেশনা পাঠানোর বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে।

অভিযোগ প্রমাণ হওয়ার পরপরই মোবাইল অপারেটর রবি ও বাংলালিংকের গ্রাহকদের দেওয়া ভাস সেবা বন্ধের নির্দেশ দেয় বিটিআরসি।

অপারেটরগুলোর কাছে নির্দেশনার চিঠি পৌঁছে ১০ নভেম্বর সন্ধ্যায়। নির্দেশনা পেয়েই অপারেটর দুটি নিয়ন্ত্রক সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ করে তাদের অবস্থান ব্যাখ্যা করে। পরে অবশ্য অপারেটর দুটির সেবা বন্ধ করতে হয়নি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে রবি থেকে পাঠানো এক বিবৃতিতে জানানো হয়, এ বিষয়ে আমরা বিটিআরসির সঙ্গে কাজ করছি। শিগগিরই বিষয়টির সমাধান হবে বলে আমরা আশাবাদী।

অন্যদিকে বাংলালিংকের চিফ কর্পোরেট অ্যান্ড রেগুলেটরি অ্যাফেয়ার্স কর্মকর্তা তাইমুর রহমান বলেন, এ ব্যাপারে বিটিআরসি’র সঙ্গে ইতোমধ্যে আমাদের আলোচনা হয়েছে। তাদের নির্দেশনা ও সংশ্লিষ্ট অন্যান্য বিষয়ে আমাদের মতামত তাদের কাছে আমরা তুলে ধরেছি। বর্তমানে বিটিআরসি’র দেওয়া প্রস্তাব বাস্তবায়নের জন্য আমরা কাজও চালিয়ে যাচ্ছি। একটি গ্রাহকবান্ধব প্রতিষ্ঠান হিসেবে আমরা সবসময় বাংলালিংক ব্যবহারকারীদের স্বার্থ রক্ষা করতে চেষ্টা করে থাকি।

প্রসঙ্গত, মোবাইল ফোন অপারেটরগুলো সংশ্লিষ্ট গ্রাহকদের তৃতীয় পক্ষের মাধ্যমে (টি-ভাস প্রতিষ্ঠান) ওয়েলকাম টিউন, রিং টোন, নিউজ অ্যালার্ট সার্ভিস, খেলার খবর, গান, ধর্মীয় তথ্য ইত্যাদির সেবা দিয়ে থাকে। এগুলোকে বলা হয় ভাস সেবা।

জানা গেছে, গ্রাহকদের অজান্তে তার মোবাইল ব্যালেন্স থেকে টাকা কেটে নেওয়ার কাজটি সরাসরি করে তৃতীয় পক্ষের প্রতিষ্ঠান যদিও মোবাইল অপারেটরগুলো টাকা কেটে নেয়। কারণ, বিষয়টির সরাসরি নিয়ন্ত্রণ থাকে অপারেটরগুলোর।

মোবাইল অপারেটরগুলো তৃতীয় পক্ষ টি-ভাস লাইসেন্সপ্রাপ্ত কোনও প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ থাকে এ ধরনের সেবা গ্রাহকদের দেওয়ার জন্য। যে পরিমাণ টাকা এসব সেবার বিপরীতে কেটে নেওয়া হয় তার বড় একটা অংশ (চুক্তির অংশ অনুযায়ী) পায় অপারেটরগুলো। অবশিষ্ট টাকা পায় টি-ভাস সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানগুলো। টাকা কেটে নেওয়ার অভিযোগের সঙ্গে জড়িত থাকার প্রমাণ মেলায় চারটি টি-ভাস সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানের সেবা বন্ধ করে দিয়েছে বিটিআরসি।

জানা যায়, অভিযোগগুলো থেকে দ্বৈবচয়নের ভিত্তিতে ১০০ জন গ্রাহকের ওপর জরিপ চালিয়ে অভিযোগের সত্যতা পায় বিটিআরসি। কমিশনের সিস্টেম অ্যান্ড সার্ভিসেস বিভাগের কর্মকর্তারা গ্রাহকদের ফোন করে তথ্য জেনে যাচাই বাছাই করেই চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে পৌঁছান। এর আগে দুটি ভাস প্রতিষ্ঠানের গত ৬ মাসের বিভিন্ন তথ্য পর্যালোচনা করে কমিশন।

Pearl IT
shahadat.hossen154@gmail.com

Would you like to share your thoughts?

Your email address will not be published. Required fields are marked *