নিউজ ডেস্ক:
চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে গুগলের ডিজিটাল বিজ্ঞাপন প্রাপ্তির হার অনেক বেড়েছে এবং তার প্যারেন্ট কোম্পানি অ্যালফাবেটের মুনাফা বেড়েছে দুই গুণের চেয়েও বেশি। মহামারীর শুরুতে আয়ে কিছুটা ধাক্কা খেলেও বিশ্বব্যাপী অনলাইননির্ভরতা বৃদ্ধিতে তাদের আয় যে বেশ চাঙ্গা তা স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। খবর এপি।

সম্প্রতি প্রকাশিত গুগলের শক্তিশালী বিজ্ঞাপন প্রবৃদ্ধিতে এটা স্পষ্ট হয়ে উঠেছে মহামারীতে বিপর্যস্ত অর্থনীতির পুনরুদ্ধারে বিজ্ঞাপনদাতারা সর্বোচ্চ চেষ্টা চালাচ্ছেন। ভ্রমণ শিল্পের জন্য এটা বড় আকারে সত্য, কারণ গত বছর এ খাতটি সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল।

বেশির ভাগ দেশে ভ্যাকসিন কার্যক্রম বৃদ্ধিতে চলতি বছর ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছে ভ্রমণ ও পর্যটন খাত। এ প্রচেষ্টা থেকে সবচেয়ে উপকৃত হয়েছে গুগলের ডিজিটাল বিজ্ঞাপন খাত। তবে সাম্প্রতিক এক কনফারেন্স কলে গুগল নির্বাহীরা সতর্ক বার্তা জানায়, নতুন করে করোনার হানায় ভোক্তা ব্যয় কমবে এবং বিজ্ঞাপনদাতারা তাদের ব্যয় কমিয়ে দেবে।

গুগলের প্যারেন্ট কোম্পানি অ্যালফাবেটের মুখ্য আর্থিক কর্মকর্তা (সিএফও) রুথ পোরাত বলেন, চলাচলে বিধিনিষেধ শিথিল ও অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের সঙ্গে সঙ্গে ভোক্তা আচরণ কেমন টেকসই হবে, তা এখনই নিশ্চিতভাবে বলা যাচ্ছে না।

জানুয়ারি-মার্চ প্রান্তিকে গুগলের বিক্রি গত বছরের একই প্রান্তিকের চেয়ে ৩২ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪ হাজার ৫০০ কোটি ডলার। গত বছরের এপ্রিল-জুন প্রান্তিকে ৮ শতাংশ হ্রাসের পর এ নিয়ে টানা তিন প্রান্তিকে বিক্রিতে প্রবৃদ্ধি দেখল গুগল। নতুন করে প্রাদুর্ভাব সত্ত্বেও অ্যালফাবেটের ইতিবাচক পূর্বাভাসে বিনিয়োগকারীরা আশায় ঘর বাঁধছে। প্রথম প্রান্তিকে ক্যালিফোর্নিয়ার মাউন্টেন ভিউ কেন্দ্রিক কোম্পানিটির আয় হয়েছে ১ হাজার ৭৯০ কোটি ডলার, যা শেয়ারপ্রতি বেড়েছে ২৬ দশমিক ২৯ ডলার। গত বছরের একই সময়ের চেয়ে যা প্রায় দ্বিগুণ বেড়েছে।

গত বছর এক প্রান্তিকে বিজ্ঞাপন থেকে আয় কমলেও পুরো বছরে বেশ ভালো সক্ষমতার পরিচয় দিয়েছে গুগল। মহামারীর মধ্যে অনলাইননির্ভরতা বৃদ্ধিতে অ্যাপল, অ্যামাজন, মাইক্রোসফট, ফেসবুক ও নেটফ্লিক্সের মতো অন্যান্য প্রযুক্তি জায়ান্টের মতো বিজ্ঞাপন থেকে আয় বেড়েছে গুগলের।

অ্যালফাবেটের শেয়ারদর বর্তমানে ২ হাজার ৩০০ ডলারে দাঁড়িয়েছে। ১৩ মাস আগে মহামারীর শুরুতে যে শেয়ারদর ছিল তার চেয়ে প্রায় দ্বিগুণ বেড়েছে। বর্তমানে অ্যালফাবেটের বাজারমূল্য দাঁড়িয়েছে প্রায় ১ দশমিক ৬ ট্রিলিয়ন ডলারে।

গুগলের ভিডিও স্ট্রিমিং প্লাটফর্ম ইউটিউবের আয় সার্চ ইঞ্জিনটির অন্য যেকোনো সেবা থেকে বেশি ছিল। গত বছর ইউটিউবের বিজ্ঞাপন থেকে আয় ৪৯ শতাংশ বেড়ে ৬০০ কোটি ডলারে দাঁড়িয়েছে। কোম্পানিটির ক্লাউড কম্পিউটিং সেবারও আয় বেড়েছে ৪৬ শতাংশ।

গুগলের সমালোচকরা বলছে, সার্চ ইঞ্জিনে নিজেদের আধিপত্যকে কাজে লাগিয়ে একচেটিয়া ব্যবসা করছে তারা। ডিজিটাল বিজ্ঞাপনের অনেকটা ডি ফ্যাক্টো প্রবেশদ্বার হয়ে দাঁড়িয়েছে গুগল। এ নিয়ে মার্কিন নীতিনির্ধারকদের বেশ কয়েকটি মামলার মুখোমুখি হয়েছে তারা। এর মাধ্যমে গুগলের লাগামহীন সম্প্রসারণের রাশ টেনে ধরার চেষ্টা চালাচ্ছেন নীতিনির্ধারকরা।

Pearl IT
shahadat.hossen154@gmail.com

Would you like to share your thoughts?

Your email address will not be published. Required fields are marked *