নিউজ ডেস্ক:
আগামী পাঁচ বছরে যুক্তরাষ্ট্রে বিনিয়োগ ২০ শতাংশ বৃদ্ধির পরিকল্পনা করছে অ্যাপল। পরবর্তী প্রজন্মের সিলিকন ও ফাইভজি ওয়্যারলেস প্রযুক্তিতে যুক্তরাষ্ট্রের নয়টি রাজ্যে ৪৩ হাজার কোটি ডলার বিনিয়োগের পরিকল্পনা করছে প্রযুক্তি জায়ান্টটি। খবর ব্লুমবার্গ।

সম্প্রতি এক বিবৃতিতে অ্যাপল জানায়, নতুন এ বিনিয়োগের ফলে আগামী পাঁচ বছরে যুক্তরাষ্ট্রে ২০ হাজার নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে। এছাড়া নর্থ ক্যারোলাইনায় ১০০ কোটি ডলার বিনিয়োগে নতুন একটি ক্যাম্পাস স্থাপন করতে যাচ্ছে আইফোন নির্মাতা কোম্পানিটি।

গত তিন বছরে অ্যাপল ২০১৮ সালে নেয়া তাদের পাঁচ বছর মেয়াদি ৩৫ হাজার কোটি ডলার বিনিয়োগের লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে গেছে। তবে কোম্পানিটি বিস্তৃত হচ্ছে এবং ২০১৮ সালের পর শেয়ারদর প্রায় ২০০ শতাংশ বেড়েছে। প্রথম ট্রিলিয়ন ডলার কোম্পানির পর এখন অ্যাপলের বাজারমূল্য ২ ট্রিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছে। ক্যালিফোর্নিয়ার কোপার্টিনোভিত্তিক কোম্পানিটি বলছে, তারা যুক্তরাষ্ট্রের সর্বোচ্চ করদাতা কোম্পানি এবং গত পাঁচ বছরে ৪ হাজার ৫০০ কোটি ডলার অভ্যন্তরীণ করপোরেট আয়কর দিয়েছে।

প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন প্রশাসন কর্তৃক বিদেশে আয়ের ওপর শুল্ক বৃদ্ধির পরিকল্পনায় অ্যাপল যুক্তরাষ্ট্রে বিনিয়োগ বৃদ্ধির পথে এগোচ্ছে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।

অ্যাপল ও মাইক্রোসফটের নেতৃত্বে গত অর্থবছর যুক্তরাষ্ট্রের বাইরে প্রযুক্তি জায়ান্টদের মুনাফা হয়েছে ১০ হাজার কোটি ডলারেরও বেশি। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের নতুন কর নীতিমালায় এবার এ মুনাফার ওপর শুল্ক বসানো হতে পারে।

বিশালাকার অবকাঠামো ব্যয় সংকুলানে চলতি মাসে বহুজাতিক কোম্পানিগুলোর ওপর শুল্ক বৃদ্ধির ঘোষণা দিয়েছে বাইডেন প্রশাসন। এ পদক্ষেপের প্রধান লক্ষ্যবস্তু হচ্ছে বড় বড় প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলো, যারা তাদের আয় সৃষ্টিকারী সম্পদ নিম্ন শুল্কের অফশোর এলাকাগুলোতে রাখছেন। প্রযুক্তি শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলো তাদের বড় অংকের মুনাফা ওই দেশগুলোতে স্থানান্তরে পারঙ্গম, যেগুলো বেশ শুল্কবান্ধব এবং যেখানে কঠোর বিধিনিষেধ নেই। বড় আকারের কারখানা বা অন্যান্য সরঞ্জাম স্থানান্তরের চেয়ে সফটওয়্যার কোড, প্যাটেন্ট ও অন্যান্য ইন্টেলেকচুয়াল প্রপার্টি স্থানান্তর খুব সহজ।

অ্যাপল যে বিনিয়োগের পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে তাতে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সাপ্লায়ার, ডাটা সেন্টার বিনিয়োগ, মূলধন ব্যয় ও অন্যান্য প্রকল্প। এর মধ্যে রয়েছে ২০টির মতো রাজ্যে কয়েক ডজন অ্যাপল টিভি প্লাস নির্মাণ কারখানা। নতুন ক্যাম্পাস ও প্রকৌশল হাব তৈরিতে নর্থ ক্যারোলাইনাতে শতকোটি ডলারেরও বেশি বিনিয়োগ করতে যাচ্ছে অ্যাপল। সেখানে অন্তত তিন হাজার নতুন কর্মসংস্থান হবে, যারা মেশিন লার্নিং, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং ও অন্যান্য অগ্রসর খাতে গবেষণা করবে।

২০২৩ সালের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রে ২০ হাজার কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে ২০১৮ সালে যে লক্ষ্যমাত্রা গ্রহণ করেছিল, তা অর্জনের কাছাকাছি রয়েছে অ্যাপল। নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি পরিকল্পনায় যুক্ত হয়েছে সান দিয়াগোতে ২০২৬ সালের মধ্যে পাঁচ হাজারের বেশি কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা, যা ২০১৮ সালের পরিকল্পনা থেকে ৫০০ শতাংশ বেশি। কলোরাডোতে নিজেদের প্রকৌশল টিম শক্তিশালী করতে ৭০০ জন নিয়োগ দেয়া হচ্ছে। এছাড়া ম্যাসাচুসেটস, ওয়াশিংটন, আইওয়া ও কলোরাডোতে হাজারো কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে যাচ্ছে অ্যাপল। অস্টিনে নির্মিত নতুন ক্যাম্পাসে আগামী বছর কাজ শুরু করবেন কর্মীরা।

Pearl IT
shahadat.hossen154@gmail.com

Would you like to share your thoughts?

Your email address will not be published. Required fields are marked *