skip to Main Content
01757-856855, 01521-464854, contact@pearlit.net Open 7AM - 8PM

যেভাবে বিপদ মোকাবিলা করছেন জাকারবার্গ

যেভাবে বিপদ মোকাবিলা করছেন জাকারবার্গ
যেভাবে বিপদ মোকাবিলা করছেন জাকারবার্গ

বেশ বিপদে আছেন মার্ক জাকারবার্গ ফেসবুক থেকে তথ্য বেহাত হওয়ার কেলেঙ্কারিতে। সাহস নিয়ে ঠান্ডা মাথায় এ বিপদ মোকাবিলা করছেন তিনি। জাকারবার্গ সাহস করে প্রথমবারের মতো যুক্তরাষ্ট্রের সিনেটরদের সামনে নানা প্রশ্নের উত্তর দিলেন। নিজের দোষ স্বীকার করে মাফ চাইলেন, সবকিছু ঠিকঠাক করতে সময় চাইলেন।

কিন্তু যাঁদের তথ্য বেহাত হয়েছে, তাঁরা কি বিষয়টিকে সহজভাবে মেনে নিচ্ছেন? তাঁদের মধ্যে কি আস্থার সংকট তৈরি হচ্ছে না? ফেসবুকে বিতর্কিত বিষয়গুলো ঠেকাতে কী করছেন জাকারবার্গ?

এএফপির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ফেসবুকে কোনো বিতর্কিত কনটেন্টের বিষয়গুলো দেখতে ২০০ জনের নির্দিষ্ট একটি কর্মিবাহিনী রয়েছে। দলটি কাউন্টার টেররিজম দল হিসেবে কাজ করে বলে জানিয়েছেন প্রতিষ্ঠানটির প্রধান নির্বাহী মার্ক জাকারবার্গ। গত বুধবার যুক্তরাষ্ট্রের সিনেটরদের সামনে শুনানিতে হাজির হয়ে এ তথ্য দেন ফেসবুকের প্রধান নির্বাহী।

ফেসবুক থেকে যুক্তরাজ্যের নির্বাচনী পরামর্শক প্রতিষ্ঠান কেমব্রিজ অ্যানালিটিকা তথ্য হাতানোর কেলেঙ্কারির বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সিনেটরদের সামনে নানা প্রশ্নের উত্তর দিতে হয় জাকারবার্গকে।

৪৪ জন সিনেটরের সমন্বয়ে গঠিত মার্কিন কংগ্রেসে আইনপ্রণেতাদের বাণিজ্যবিষয়ক ও বিচারক কমিটির যৌথ শুনানিতে হাজির হতে হয় জাকারবার্গকে। সেখানে তথ্য সুরক্ষা, বিজ্ঞাপন, সন্ত্রাস নির্মূল ও নানা ক্ষতিকর কর্মকাণ্ড ঠেকাতে ফেসবুকের পরিকল্পনা বিষয়ে নানা প্রশ্নের উত্তর দিতে হয় জাকারবার্গকে।

জাকারবার্গ বলেন, ‘২০০ জনের একটি দল কাউন্টার টেররিজম বিষয়টি দেখে। যেসব কনটেন্টকে ব্যবহারকারীরা ফ্ল্যাগ দেখান, সেগুলো বিবেচনা করেন দলের সদস্যরা। ৩০টি ভাষায় কাজ করে ওই টিম। এ ছাড়া কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তানির্ভর টুল আছে, যা বিতর্কিত কনটেন্ট শনাক্ত করতে পারে এবং স্বয়ংক্রিয়ভাবে অ্যাকাউন্ট মুছে দিতে পারে।’

গত বছর ফেসবুক কর্তৃপক্ষ জানিয়েছিল, ওই দলটিতে কাউন্টার টেররিজম বিশেষজ্ঞ, সাবেক আইনি কর্মকর্তা, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিশ্লেষক ও প্রকৌশলীরা রয়েছেন।
শুনানিতে কংগ্রেসে কমিটি ফেসবুকের কাউকে লক্ষ্য করে দেখানো বিজ্ঞাপনপদ্ধতি ও ফেসবুক ব্যবহারকারীর ব্যক্তিগত তথ্য থেকে লাভ করার বিষয়ে উদ্বেগ জানান। জাকারবার্গ বলেন, ফেসবুক কর্তৃপক্ষ ব্যবহারকারীর ব্রাউজিং কার্যক্রম অনুসারে বিজ্ঞাপন দেখায়। তারা ব্যবহারকারীর তথ্য অনুযায়ী বিজ্ঞাপন দেখায় না।

জাকারবার্গ বলেন, ব্যবহারকারীর তথ্য সাময়িকভাবে ওয়েবলগে রূপান্তর করা হয়। এগুলো থেকে ব্যবহারকারী কোন ধরনের বিজ্ঞাপন দেখতে পছন্দ করতে পারেন, তা ধারণা করা হয়। ওই তথ্য পরে ডাউনলোড ইয়োর ইনফরমেশন ফিচারে রাখা হয়। এ তথ্যের ওপর ব্যবহারকারীর পুরো নিয়ন্ত্রণ থাকে।

ভুক্তভোগী জাকারবার্গ
নিউইয়র্ক পোস্ট-এর এক খবরে জানানো হয়, শুনানিতে জাকারবার্গ বলেছেন, কেমব্রিজ অ্যানালিটিকার সাম্প্রতিক তথ্য কেলেঙ্কারির ঘটনায় তাঁর নিজের তথ্যও বেহাত হয়েছে। তিনি নিজেও ভুক্তভোগী। ব্যক্তিগত তথ্য চুরি করা ও তা পরে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করায় যুক্তরাজ্যের নির্বাচনী পরামর্শক ওই প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেবেন তিনি।

কেমব্রিজ অ্যানালিটিকা ৮ কোটি ৭০ লাখ তথ্য ফেসবুক থেকে হাতিয়ে নিয়েছে। কেমব্রিজ অ্যানালিটিকা ২০১৬ সালে মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্পের সহযোগিতার জন্য বেশি পরিচিত। ট্রাম্পের বিজয়ে এর ভূমিকা রয়েছে বলে মনে করা হয়। তবে ওই প্রতিষ্ঠানটি দাবি করছে, ফেসবুক থেকে সংগৃহীত কোনো তথ্য ট্রাম্পের প্রচারণায় তারা ব্যবহার করেনি। ফেসবুক ব্যবহারকারীদের তথ্য বেহাত হওয়ার ঘটনাটি সামনে নিয়ে এসেছেন যুক্তরাজ্যের লন্ডনভিত্তিক কেমব্রিজ অ্যানালিটিকার সাবেক কর্মী ক্রিস্টোফার উইলি। তিনিই প্রথম জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে এবং যুক্তরাজ্যের ব্রেক্সিট (ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে বিচ্ছেদ) প্রশ্নে গণভোটে ভূমিকা ছিল তাঁর সাবেক কর্মস্থলের। এ ব্যাপারে কেমব্রিজ অ্যানালিটিকাকে সহযোগিতা করেছিলেন কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রভাষক আলেকসান্দ্র কোগান। তিনি বিশেষ অ্যাপ তৈরি করে ফেসবুকের প্ল্যাটফর্মে ছেড়েছিলেন। এর মাধ্যমে তিনি কোটি কোটি ব্যবহারকারীর ব্যক্তিগত তথ্য সংগ্রহ করে তা বিক্রি করে দিয়েছিলেন কেমব্রিজ অ্যানালিটিকার কাছে।

ক্রিস্টোফার উইলির ভাষ্যমতে, কেমব্রিজ অ্যানালিটিকা ওই তথ্যগুলো প্রক্রিয়াজাত করে ২০১৬ সালের মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রচার শিবিরকে সরবরাহ করেছিল। শুধু তা-ই নয়, ওই তথ্যগুলো বিশ্লেষণ করে সম্ভাব্য রিপাবলিকান ভোটারও চিহ্নিত করা হয়।

প্রথমে ধারণা করা হয়েছিল, সম্ভবত ৫ কোটি ফেসবুক ব্যবহারকারীর তথ্য হাতিয়ে নিয়েছে কেমব্রিজ অ্যানালিটিকা। তবে চলতি সপ্তাহে ফেসবুক কর্তৃপক্ষ স্বীকার করে, ৮ কোটি ৭০ লাখ ব্যবহারকারীর তথ্য বেহাত হয়েছে।

ফেসবুকের উদ্যোগ
জাকারবার্গ বলেছেন, অনৈতিকভাবে কেমব্রিজ অ্যানালিটিকা এখান থেকে তথ্য নিয়েছে এবং লাখো সদস্যদের তথ্য হাতিয়েছে। কেমব্রিজ অ্যানালিটিকা কতটুকু কী করেছে, তা পুরোপুরি খতিয়ে দেখবেন এবং যাঁরা ক্ষতিগ্রস্ত তাঁদের এ বিষয়ে বিস্তারিত জানানোর কথা বলেছেন তিনি। ফেসবুকে টুল আনার কথাও বলেছেন। জাকারবার্গ জানান, যাঁদের তথ্য ফাঁস হয়েছে, গত সোমবার থেকে তাঁদের জানাতে শুরু করেছে ফেসবুক। এ ছাড়া ফেসবুকের কিছু পরিবর্তন আনতে আরও সময় প্রয়োজন বলে জানান জাকারবার্গ। ফেসবুককে ঠিকঠাকমতো চালানোর প্রতিশ্রুতিও দেন তিনি। মানুষের ব৵ক্তিগত তথ্য সুরক্ষার দায়িত্ব নেওয়ার কথা বলেন।

ফেসবুক মিডিয়া নয়
জাকারবার্গ বলেন, ‘ফেসবুক নিজে কোনো তথ্য তথ্য বিক্রি করে না। বিজ্ঞাপন দেখাতে তথ্য বিক্রি করার প্রয়োজন নেই। ফেসবুকের বিজ্ঞাপন মডেল পরিষ্কার সবার কাছে। ফেসবুক কোনো মিডিয়া বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান নয়। এটি একটি প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান। আমরা প্রথম যেটা করি তা হচ্ছে কারিগির কাজ। এখানে প্রকৌশলীরা কোড লিখে পণ্য তৈরি করেন এবং মানুষকে সেবা দেন। এর সঙ্গে আমাদের আরও কিছু করতে হয়। কনটেন্ট তৈরির জন্য মানুষকে অর্থ দেওয়া হয়। আমরা এন্টারপ্রাইজ সফটওয়্যার তৈরি করি। তারপরও আমরা নিজেদের এন্টারপ্রাইজ বা ব্যবসায়িক সফটওয়্যার কোম্পানি বলব না। মানুষকে ইন্টারনেট সংযোগ দিতে আমরা ড্রোন তৈরি করি। তাই বলে আমরা নিজেদের বিমান নির্মাতা প্রতিষ্ঠান বলব না। তবে ভুয়া খবর ছড়ানো, নির্বাচনে বিদেশি হস্তক্ষেপ বন্ধ ঠেকাতে ফেসবুক খুব বেশি কিছু করেনি, এটা পরিষ্কার। এটা ভুল ছিল। এর জন্য দুঃখিত।’

সব দায়িত্ব জাকারবার্গের
৪৪ জন সিনেটরের সমন্বয়ে গঠিত মার্কিন কংগ্রেসে আইনপ্রণেতাদের বাণিজ্যবিষয়ক এবং বাণিজ্য ও বিচারক কমিটির যৌথ শুনানিতে তাঁকে ট্রেডমার্ক পোশাক টি-শার্ট, জিনস ছেড়ে কোট পরে হাজির হতে দেখা যায়। মঙ্গলবার কয়েক ঘণ্টাব্যাপী ওই শুনানিতে কয়েকবার মাফ চাওয়ার পাশাপাশি প্রাইভেসি পুনর্গঠনের প্রতিশ্রুতিও দেন তিনি। ওই শুনানিতে জাকারবার্গের ব্যাখ্যাকে চ্যালেঞ্জ করেন সিনেটররা। নিজের ঘাড়ে দায়িত্ব নিয়ে জাকারবার্গ বলেন, ‘আমি এটা তৈরি করেছিলাম, এটার পরিচালনার দায়িত্বে আছি। এখানে যা কিছু ঘটে তার সব দায়িত্ব আমারই।’

ফল হাতেনাতে
বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, কংগ্রেসের শুনানিতে হাজির হওয়াতে কপাল খুলেছে জাকারবার্গের। বেড়ে গেছে শেয়ারের দাম। শুনানিতে তাঁর দুর্দান্ত পারফরম্যান্স শেয়ারের দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। মঙ্গল ও বুধবার ফেসবুকের শেয়ারের দাম বাড়ায় ৩০০ কোটি মার্কিন ডলার বেড়েছে জাকারবার্গের সম্পদ।

তথ্য: এএফপি ও রয়টার্স

Shahadat Hossen

Shahadat Hossen

Hello! I’m Md. Shahadat Hossen. I'm a Journalist, Web Designer, Entrepreneur, Founder at Tech Express & Pearl IT Limited. I started journalism from 2012. In the 2018, started Web Development Company Pearl IT. As a Journalist i Work Bangladeshi popular and oldest online news portal Bangladesherpatro.com. He was worked Dainik Desherpatro, The Dhaka Daily.

This Post Has 0 Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *