skip to Main Content
01757-856855, 01521-464854, 01752-684000 contact@pearlit.net Open 7AM - 8PM

৫ মাসে ইকমার্স খাতে প্রবৃদ্ধি ছাড়িয়েছে ১০ বছরের থেকেও বেশি!

নিউজ ডেস্ক:
দেশের প্রথম ই-কমার্স সাইট কোনটি তা জানা না গেলেও বাংলাদেশের ইতিহাসে ই-কমার্স খাত শুরু হয়েছিল ১০-১১ বছর আগে বলে অনুমান করা হয়। সম্প্রতি করোনা মহামারীর গত ৫ মাসে এর জনপ্রিয়তা বহুগুন বেড়ে গেছে বলে মনে করছেন এই খাতের নীতি নির্ধারক, উদ্যোক্তা, সংগঠকরা।

তারা জানান, করোনাকালে দেশের মানুষ বিশেষ করে রাজধানী ঢাকায় বসবাসকারী বেশিরভাগ মানুষ ই-কমার্স নির্ভর হয়ে পড়ে। যার মধ্যে বেশি আলোচিত ছিল গ্রোসারি (নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস বা মুদি আইটেম), যা এই খাতকে প্রায় শতভাগ প্রবৃদ্ধি এনে দিয়েছে।

জানা গেছে, ইদানিং ফেসবুকনির্ভর ই-কমার্সগুলোর মধ্যে কিছু প্রতিষ্ঠান বেশ শক্তিশালী হয়েছে। অনেক পেজ এসেছে। প্রাতিষ্ঠানিক ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানও এই সময়ে চালু হয়েছে একাধিক। রাইড শেয়ার প্রতিষ্ঠান ‘সহজ’ চালু করেছে ‘সহজ ফুড’। এই সেবার আওতায় প্রতিষ্ঠানটি গ্রোসারি ও ওষুধ ঘরে পৌঁছে দিচ্ছে। এছাড়াও কিছু ইকমার্স সাইট চালু হয়েছে বিভিন্ন বিশেষায়িত আইটেম নিয়ে। ছোটদের পণ্য নিয়ে ভালো করছে আলাদিন ডট কম। অর্গানিক ফুডের প্রতিষ্ঠান হিসেবে সুনাম কুড়িয়েছে নিওফার্মার। ইভ্যালি ও প্রিয়শপ ডট কম চালু করেছে গ্রোসারি সার্ভিস।

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) বিভাগের প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, করোনাকালে লকডাউনের সময় এবং এলাকাভিত্তিক লকডাউনে ই-কমার্স খাত বড় ভূমিকা রেখেছে। তিনি বলেন, ‘আমরা গত ১০-১১ বছর ধরে ই-কমার্সকে আমরা যতটা জনপ্রিয় করতে চেয়েছি, গত পাঁচ মাসে তার চেয়ে অনেক বেশি জনপ্রিয় করতে পেরেছি। প্রায় সব পর্যায়ের লোকজন এখন বুঝতে পেরেছেন ই-কমার্স কী।’ তার দাবি, গত পাঁচ মাসে ই-কমার্সে ৫০ শতাংশের বেশি কেনাকাটা বেড়েছে।

প্রতিমন্ত্রী জানান, ই-কমার্সকে সারাদেশে ছড়িয়ে দিতে ফুড ফর নেশন, একশপের মতো উদ্যোগ গ্রহণ করেছে সরকার। ই-কমার্সের এমন প্রবৃদ্ধি ধরে রাখতে পারলে ২০২৫ সালে ই-কমার্স বাজারের আকার হবে ১০ হাজার কোটি টাকার বেশি। ২০২৫ সালের মধ্যে এই খাতে আরও ৫ লাখ কর্মসংস্থান তৈরি হবে বলে আশাবাদী তিনি।

গ্রোসারিনির্ভর ই-কমার্সের বড় প্ল্যাটফরম চালডালের প্রধান পরিচালন কর্মকর্তা (সিওও) জিয়া আশরাফ বলেন, ‘গত কয়েক মাসে ই-কমার্সে প্রায় শতভাগ গ্রোথ হয়েছে। এটা এই শিল্পের জন্য ইতিবাচক।’ এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আশাকরি, পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলেও এই গ্রোথটা থাকবে।’ কারণ, মানুষের এখন অভ্যাসের পরিবর্তন হচ্ছে। ঘরে বসেই সব পাচ্ছেন। তাহলে কষ্ট করে কেন আর বাইরে যাবেন- প্রশ্ন করেন তিনি। তিনি জানান, এই সময় ই-কমার্সে গ্রোসারির চাহিদা বেড়েছে। অনেকেই-কমার্স প্রতিষ্ঠানে গ্রোসারি আইটেম নিয়ে এসেছেন। ফলে ক্রেতা বেড়েছে এবং ক্রেতাদের পছন্দ (প্রতিষ্ঠান) করার সুযোগও বেড়েছে।

করোনার এই সময়ে বিলাসী পণ্য বা দামি পণ্য বিক্রি কম হচ্ছে উল্লেখ করে জিয়া আশরাফ বলেন, ‘নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস বেশি বিক্রি হচ্ছে এখন।’ উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, ‘ধরা যাক, কেউ একটা মোবাইল কিনলেন অনলাইন থেকে। সেটা হয়তো বছরে একবারই। কিন্তু নিত্যপ্রয়োজনীয় আইটেম তো সব সময় লাগছে। ফলে আমাদের ফোকাসও এখন গ্রোসারিতে।’

তিনি আরও বলেন, ‘আগে আমাদের প্রতিদিন অর্ডার নেওয়ার সক্ষমতা ছিল ২ হাজার ৪০০ থেকে ২ হাজার ৭০০। এখন তা হয়েছে ৫ থেকে ৬ হাজার। আমরা এটাই এখন ডেলিভারি দিচ্ছি। অর্ডার তো আসে অনেক। সব নেওয়ার সক্ষমতা আমাদের নেই।’ তিনি জানান, করোনার এই সময়ে তারা একাধিক ওয়্যারহাউস খুলেছেন, লোকবল বাড়িয়েছেন ভালো সার্ভিস দেওয়ার জন্য। করোনাকালে চালডাল ডট কম থেকে ৩০০ টাকার বেশি পণ্য কিনলে তারা ডেলিভারি চার্জ নিচ্ছেন মাত্র এক টাকা।

ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলোর সংগঠন ই-ক্যাবের (ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ) সাধারণ সম্পাদক মো. আবদুল ওয়াহেদ তমাল মনে করেন, দেশে এই সময়ে ই-কমার্সে গ্রোথ হয়েছে ৭০-৭৫ ভাগ। ভবিষ্যতেও এই গ্রোথ ধরে রাখা সম্ভব হবে। কারণ, হিসেবে দেশে ‘ডিজিটাল বায়ার’ বেড়েছে বলে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, ‘ই-কমার্সের উত্থানে অনেক ফিজিক্যাল শপ ভবিষ্যতে বন্ধ হয়ে যাবে।’ তবে তিনি মনে করেন, এই খাতে অনেক ধরনের প্রতারণাও হচ্ছে। আগে সেসব বন্ধ করতে হবে। এটা করতে পারলে আস্থার ভিতটা আরও শক্ত হবে।’

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন,‘নীতিমালা দিয়ে হবে না,এসব বন্ধ করতে হলে আইন লাগবে।’

আবদুল ওয়াহেদ তমাল বলেন,‘এই সময়ে অনেক উদ্যোক্তা তৈরি হয়েছে। তাদেরকে নীতিমালা ও আইনের আওতায় আনতে হবে। পেমেন্ট নিয়ে এখনও সমস্যা রয়ে গেছে। আস্থার জায়গা তৈরি করতে হলে এটা দূর করতে হবে। বড় বড় অনেক প্রতিষ্ঠানও পেমেন্ট ও রিফান্ড নিয়ে ঝামেলা করে, দীর্ঘ সময় নেয়। সেসব দূর করতে পারলে এই খাতের প্রবৃদ্ধি এখনের চেয়ে বেশি হবে।’

স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় এখন দেশের চেইন সুপার মার্কেটগুলোর অনলাইনেও বিক্রি বেড়েছে। মীনাবাজার, স্বপ্ন, আগোরা, ইউনিমার্টের অনলাইনে বিক্রি অন্য সময়ের তুলনায় কয়েকগুণ বেড়েছে। মীনাক্লিক সূত্রে জানা গেছে, অন্য সময়ের তুলনায় বর্তমানে মীনাক্লিকের অর্ডার ৪-৫ গুণ বেড়েছে। বর্তমানে প্রতিদিন অর্ডার আসছে ১২০০-১৫০০। কখনও কখনও এর বেশিও।

অনেক ই-কমার্স প্ল্যাটফর্মেও ছোট ছোট উদ্যোক্তা, মার্চেন্টদের যুক্ত হওয়ার হার বেড়েছে। নিজেদের সাইট থাকার পাশাপাশি বড় মার্কেটপ্লেসে নিজেদের সাইটকে সাজিয়েছেন অনেকে। এরকমই একজন উদ্যোক্তা নাম ও পরিচয় প্রকাশ না করার শর্তে জানান, বড় বড় মার্কেটপ্লেসের (দারাজ, ইভ্যালি, আজকেরডিল ইত্যাদি) ভিজিটর বেশি। সেখানে নিজের প্রতিষ্ঠানকে একটা বড় পরিমণ্ডলে নিয়ে যাওয়ার সুযোগ তৈরি হয়েছে। এই সুযোগও নেওয়া উচিত। তাহলে আমাদের মতো ছোট ছোট প্রতিষ্ঠানগুলোর ওপর ক্রেতাদের আস্থা বাড়বে। কারণ, হিসেবে তিনি উল্লেখ করেন,আমরা কোনও খারাপ পণ্য দিলে ক্রেতা অন্তত ওই মার্কেটপ্লেসকে ধরতে পারবে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ই-কমার্সের প্রবৃদ্ধিতে এটাও অনেক বড় ভূমিকা রাখছে।

গত কোরবানি ঈদে অনেক ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান, মার্কেটপ্লেস, সাধারণ প্রতিষ্ঠান এবং সরকারি প্রতিষ্ঠান ওয়েবসাইট, অ্যাপ ইত্যাদি তৈরি করে কোরবানির পশু বিক্রি করে। ই-ক্যাবের দেওয়া এক হিসাবে দেখা গেছে, এবার অনলাইনে অন্তত ২৭ হাজার গরু বিক্রি হয়েছে। ছাগল, ভেড়ার সংখ্যাও কম নয়। এছাড়া এই হিসাবের বাইরে আরও লাখখানেক কোরবানির পশু বিক্রি হয়েছে বিভিন্ন অনলাইন প্ল্যাটফরম, অনলাইন শপ ইত্যাদি থেকে পরোক্ষভাবে। সংগঠনটির দাবি, অন্তত ৫ লাখ গরু ফেসবুকসহ বিভিন্ন প্ল্যাটফরমে প্রদর্শিত হয়েছে, যা অন্যান্য বছরের তুলনায় কয়েকগুণ বেশি।

আর এসবই ই-কমার্স খাতে প্রবৃদ্ধি বাড়িয়েছে কয়েকগুণ বলে অভিমত সংশ্লিষ্টদের।

প্রতিবেদন : বাংলাট্রিবিউন।

Shahadat Hossen

Shahadat Hossen

Hello! I’m Md. Shahadat Hossen. I'm a Journalist, Web Designer, Entrepreneur, Founder at Tech Express & Pearl IT Limited. I started journalism from 2012. In the 2018, started Web Development Company Pearl IT. As a Journalist i Work Bangladeshi popular and oldest online news portal Bangladesherpatro.com. He was worked Dainik Desherpatro, The Dhaka Daily.

This Post Has 0 Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *