নিউজ ডেস্ক:
ফের অসংখ্য চীনা অ্যাপ নিষিদ্ধ করল ভারত। লাদাখে সাম্প্রতিক উত্তেজনার পর এই সিদ্ধান্ত নেয়া হলো। মাসখানেক আগে টিকটক-সহ একাধিক চীনা অ্যাপ নিষিদ্ধ করেছিল ভারত। বলা হয়েছিল ওই অ্যাপগুলির মাধ্যমে দেশের তথ্য চুরি করছে চীন।

এবার আরো ১১৮টি অ্যাপ নিষিদ্ধ করা হলো। যার মধ্যে রয়েছে জনপ্রিয় অনলাইন গেম পাবজি। সরকার জানিয়েছে, ওই খেলার মাধ্যমে দেশের সার্বভৌমত্ব আক্রান্ত হচ্ছিল। চীন ওই অ্যাপের মাধ্যমে ভারতের গোপন তথ্য চুরি করছিল। সে কারণেই পাবজিসহ আরও ১১৮টি অ্যাপ নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

জুন মাসে লাদাখের গালওয়ানে চীনের পিপলস লিবারেশন আর্মির সঙ্গে ভারতীয় সেনার লড়াইয়ে ২০ জন সেনা জওয়ান নিহত হয়েছিলেন। উত্তেজনা এতটাই বেড়েছিল যে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখার দুই ধারে যুদ্ধের প্রস্তুতি নিতে শুরু করে দুই দেশ।

পরে কূটনৈতিক, রাজনৈতিক এবং সেনা স্তরের বৈঠকে পরিস্থিতি কিছু প্রশমিত হয়। তবে সেই সময়েই ভারত একাধিক চীনের অ্যাপ নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নেয়। যার মধ্যে জনপ্রিয় টিকটকও ছিল। ভারত জানিয়েছিল, এও এক ধরনের ‘ডিজিটাল স্ট্রাইক’। চীনের অ্যাপ বয়কট করে চীনকে শিক্ষা দেয়ার চেষ্টা। সূত্র বলছে, কিছুদিনের মধ্যে চীনা অ্যাপ নিয়ে সরব হয় আমেরিকাও।

প্রসঙ্গত, আগস্টে নতুন করে লাদাখে সংঘাত শুরু হয়েছে। উত্তাপ ফের বেড়েছে। এই পরিস্থিতিতে ফের চীনা অ্যাপ বয়কটের সিদ্ধান্ত নেয়া হলো। নিষিদ্ধ করা হলো পাবজি।

ভারতে অনলাইন গেম পাবজি অত্যন্ত জনপ্রিয়। গোটা পৃথিবীতে পাবজি ব্যবহারকারীর সংখ্যা ৭৩৪ মিলিয়ন। শুধু ভারতেই পাবজি ডাউনলোড করেছেন ৫০ মিলিয়ন মানুষ। প্রতিদিন পাবজি খেলেন ১৩ মিলিয়ন মানুষ। বস্তুত, পাবজি একরকম নেশার পর্যায়ে পৌঁছে গিয়েছে। পাবজির জন্য আত্মহত্যার ঘটনাও ঘটেছে। আচমকা এই অ্যাপটি নিষিদ্ধ হয়ে যাওয়ায় কার্যত মাথায় হাত অসংখ্য পাবজি খেলোয়াড়ের।

কূটনৈতিক মহলের একাংশের প্রশ্ন, অ্যাপ নিষিদ্ধ করে আদৌ চীনের সঙ্গে ঘটমান বিতর্কের অবসান সম্ভব কি? তাদের বক্তব্য, সীমান্তে চীন যে ভাবে থ্রেট তৈরি করছে, তা মোকাবিলার জন্য আরও বেশি প্রস্তুতি নেয়া দরকার। বস্তুত, পাকিস্তান এবং নেপালের সঙ্গে চীন যেভাবে সম্পর্ক রক্ষা করছে, ভারতের জন্য সেটিও এক সমস্যা। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে ভারতকে কূটনৈতিক ক্ষেত্রে আরও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে হবে বলেই তাদের বক্তব্য।

কূটনৈতিক মহলের অন্য অংশ অবশ্য মনে করছে, অ্যাপ নিষিদ্ধ করে চীনকে ভালোই জবাব দিচ্ছে ভারত। কারণ, একুশ শতকের সংঘাত কেবল সামরিক শক্তিতে হয় না, সাইবার হাতিয়ার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ভারত সচেতন ভাবেই সেই অস্ত্র ব্যবহার করছে। সূত্র: ডয়চে ভেলে।

Pearl IT
shahadat.hossen154@gmail.com

Would you like to share your thoughts?

Your email address will not be published. Required fields are marked *