নিজস্ব প্রতিবেদক:
মোবাইল ব্যাংকিংয়ের পরস্পর লেনদেনে সার্ভিস চার্জ প্রত্যাহার ও নিরাপত্তা জোরদারের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ মুঠোফোন গ্রাহক এসোসিয়েশন। বুধবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে মুঠোফোন গ্রাহক এসোসিয়েশনের সভাপতি মহিউদ্দীন আহমেদ এ দাবি জানান।

মহিউদ্দীন আহমেদ বলেন, “বাংলাদেশের মোবাইল ব্যাংকিং সেবায় খুব সহজ ও প্রান্তিক পর্যায়ে ব্যবহারযোগ্য সকলের উপযোগী একমাত্র মাধ্যম মোবাইল ব্যাংকিং (এমএফএস)। ২০১০ সালে মোবাইল ব্যাংকিং যাত্রা শুরু করে বাংলাদেশ আজ বিশ্বে দ্বিতীয়, এশিয়া মহাদেশের মধ্যে অন্যতম। বর্তমানে এই সেবায় গ্রাহক সংখ্যা ৯ কোটি ২৯ লাখ ৩৭ হাজার। এজেন্টের সংখ্যা প্রায় ১০ লাখ ছাড়িয়ে গেছে। চলতি বছরের আগস্টে এ সেবায় লেনদেন হয়েছে ৪১ হাজার কোটি টাকা। এই সেবার মাধ্যমে প্রবাসী লেনদেন হয়েছে ১০৪ কোটি টাকা, বেতন-ভাতা পরিশোধ হয়েছে ১ হাজার ৬৩ কোটি টাকা, গ্যাস বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ ৯০৮ কোটি টাকা। এ সেবার সকল প্রতিবন্ধকতা দূর করে বাণিজ্যিক ব্যাংক সমূহের সাথে আন্তঃসংযোগ বা আন্তঃলেনদেন চালু করনে আজ থেকে উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছিল। কিন্তু বাংলাদেশ ব্যাংকের কারিগরি ত্রুটি থাকার কারণে আজ তা সম্ভব হচ্ছে না।

তিনি আরও বলেন, “এ সেবা মূলত বিকাশ, ইউ ক্যাশ, ই ওয়ালেট, ও পূবালী ব্যাংকের লেনদেন হবার কথা ছিল। বাকি ব্যাংকসমূহে আগামী বছর ৩০ মার্চ এর মধ্যে এ সেবায় যুক্ত হবার কথা। আমরা এ সেবাকে স্বাগত জানালেও মূলত দুটি বিষয় আমাদেরকে ভাবাচ্ছে। প্রথমত, এই সেবার সার্ভিস চার্জ। এ সিস্টেমের লেনদেনের জন্য সার্ভিস চার্জ নির্ধারণ করে দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। ব্যাংক হিসাব মতে এমএফএস হিসাবে এবং এমএফএস হিসাব মতে অর্থ স্থানান্তরে উভয়ক্ষেত্রেই সংশ্লিষ্ট এমএফএস প্রোভাইডার সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের লেনদেনে অর্থের ০.৪৫% ফি প্রদান করবে। দ্বিতীয়ত এমএফএস প্রোভাইডারের হিসাব মতে অন্য এমএফএস প্রোভাইডারের (পি টু পি) হিসাবে অর্থ স্থানান্তরের ক্ষেত্রে প্রাপক এমএফএস প্রোভাইডার থেকে প্রেরক প্রোভাইডারেকে সাকুল্যে লেনদেন অর্থের ০.৮০% প্রদান করবে। অর্থাৎ হাজারে ৮ টাকা প্রদান করতে হবে। সেই উক্ত লেনদেনের জন্য পূর্বের চার্জ বলবৎ থাকবে।”

মুঠোফোন গ্রাহক এসোসিয়েশনের সভাপতি বলেন, আমাদের বক্তব্য মোবাইল ব্যাংকিংয়ের সার্ভিস চার্জ এমনিতেই অনেক বেশি তারপর নতুন করে লেনদেনের ক্ষেত্রে এই ধরনের সার্ভিস চার্জ যুক্ত হলে এর সাথে সার্ভিস প্রোভাইডারদের চার যুক্ত হবে ফলে সে বাড়বে বহুলাংশে বৃদ্ধি পাবে। সেই সাথে ক্যাশ আউট এর খরচ যুক্ত হলে এ সেবা মূলত মুখ থুবরে পড়বে। পাশাপাশি গ্রাহকদের গলাকাটা হবে। বর্তমানে দেশের রিটেইলারে সংখ্যা প্রায় ১০ লক্ষের উপর কিন্তু এই সকল রিটেলার দের পর্যাপ্ত প্রশিক্ষণ ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা জানা নেই। এমনিতেই প্রতিনিয়ত অসংখ্য গ্রাহক হ্যাকারদের কবলে পড়ে সর্বশান্ত হচ্ছে। আন্ত মোবাইল ব্যাংকিং লেনদেন চালু হলে লেনদেনের পরিমাণ বহুলাংশে বৃদ্ধি পাবে। একই সাথে তার বাণিজ্যিক ব্যাংকের লেনদেন হুমকির মুখে পড়তে পারে। তাই বৃহত্তর স্বার্থে সকল রিটেলার দের পর্যাপ্ত প্রশিক্ষণ ও সাইবার নিরাপত্তার বিষয়টি বিবেচনায় আনা উচিত। অতএব আমাদের দাবি আন্ত মোবাইল ব্যাংকিং সার্ভিস চার্জ প্রত্যাহার করা হোক একই সাথে এ লেনদেনের নিরাপত্তার বিষয়টি সর্বোচ্চ গুরুত্ব সহকারে বিবেচনায় নেয়া হোক।

Pearl IT
shahadat.hossen154@gmail.com

Would you like to share your thoughts?

Your email address will not be published. Required fields are marked *