ভিডিও স্ট্রিমিং প্ল্যাটফরম ইউটিউবে আপত্তিকর কমেন্টকারীদের বিরুদ্ধে এবার ব্যবস্থা নেবে প্রতিষ্ঠানটি। কুরুচিকর মন্তব্য করলেই সতর্কবার্তা…
এনবিআর-চট্টগ্রাম কাস্টমস’র সার্ভার হ্যাক: ৬৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা
নিউজবিডি ডেস্ক:
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর-চট্টগ্রাম কাস্টমস) সার্ভার হ্যাক করে চট্টগ্রাম বন্দরসহ দেশের ৪ বন্দরে জব্দকৃত প্রায় ১২ হাজার (১১ হাজার ৯১৬টি) পণ্যভর্তি কনটেইনার গায়েব করার ঘটনায় ২০ মামলা দায়ের করেছে শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর। ৬৭ জনকে আসামি করে গতকাল সোমবার রাজধানীর রমনা থানায় মামলাগুলো দায়ের করেছেন অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা।
মামলায় বিল অব এন্ট্রি অনুযায়ী আসামি হলেন ১৪ আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানের ১৬ মালিক, ৭ সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টের স্বত্বাধিকারী-১৭ জন, সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট এর ৩২ কর্মচারী এবং অ্যাসাইকুডা ওয়ার্ল্ড সিস্টেমে অবৈধ অনুপ্রবেশকারী ৩ হ্যাকার।
মামলায় যে তিন হ্যাকারকে আসামি করা হয়েছে তারা হলেন- মো. আবুল কামাল, মো. জহুরুল ইসলাম, ও মো. আব্দুল গোফরান। ৩ জনের বাড়িই চট্টগ্রামে। এদের মধ্যে হ্যাকার জহুরুল ইসলামকে গত রবিবার চট্টগ্রাম থেকেই গ্রেপ্তার করেন শুল্ক গোয়েন্দারা। এ সময় জব্দ করা হয় জহিরুলের একই নামে দুটি জাতীয় পরিচয়পত্র (আইডি কার্ড)। ইতিমধ্যেই তাকে ঢাকার মালিবাগ সিআইডি সদর দপ্তরে আনা হয়েছে।
শুল্ক গোয়েন্দাদের দায়ের করা ২০ মামলায় অন্য আসামিরা হলেন- আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান আরকে ইন্টারন্যাশনালের বিথী রাণী সাহা, সিফাত ট্রেডিংয়ের মো. সালাহউদ্দিন টিটো, জারার এন্টারপ্রাইজের মাহবুবুর রহমান, মুভিং ট্রেড ইন্টারন্যাশনালের মো. মিজানুর রহমান চাকলাদার, মো. মফিজুল ইসলাম লিটন, আব্দুল হান্নান দেওয়ান, মেসার্স এসপি ইন্টারন্যাশনালের মোহাম্মদ সেলিম, মেসার্স জাহিদ ট্রেড ইন্টারন্যাশনালের মো. জাহিদুল ইসলাম, এসকে এস এন্টারপ্রাইজের রাসেদুল ইসলাম (কাফি), খান এন্টারপ্রাইজের মো. রাশেদুল হাসান খাঁন, মিমি লেদার কটেজের গোলাম মোস্তফা, মেসার্স এ কিউ ট্রেডিংয়ের আবদুল কুদ্দুস রায়হান, মেসার্স সুপার ট্রেড ইন্টারন্যাশনালের রবীন্দ্রনাথ সরকার, এইচএল ট্রেড কর্পোরেশন এর আব্দুল হান্নান দেওয়ান, এসডি ওয়ার্ল্ড ইন্টারন্যাশনালের নাসরিন রায়হান ও স্যাম ইন্টারন্যাশনালের মো. সেফায়েত উল্লাহ।
এ ছাড়া মামলার অন্য আসামিরা হচ্ছেন- সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট মেসার্স এম.আর ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল এর মো. মিজানুর রহমান চাকলাদার, দুলাল শিকদার, সজিব মিয়া, মো. রাজ্জাক হাওলাদার, চাকলাদার সার্ভিসেসের মো. হাবিবুর রহমান অপু চাকলাদার, মো. নাঈম মৃধা, মো. শফিকুল ইসলাম, মুহাম্মদ মনিরুজ্জামান, মো. শাকিব হাসান তুহিন, স্বরণিকা শিপিং কাইজেন লি. এর মো. কামরুল ইসলাম, জাবেদ আহমেদ, তানজিন মোর্শেদ, এ এস এম খসরুল আলম খান, শরীফ উদ্দিন, মো. আব্দুল কাফি, মো. আনিসুর রহমান, মেসার্স লায়লা ট্রেডিং কোম্পানির মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন, আব্দুল হালিম জমাদ্দার, মো. এরশাদ, মো. আরিফুর ইসলাম চৌধুরী, মো. সাদ্দাম হোসেন, মো. মঈনউদ্দিন, মো. ফারুক আহম্মদ, মো. কামরুল ইসলাম ভূইয়া, মো. ইমাম হোসেন, সাদ্দাম হোসেন, মো. ইকবাল হোসাইন, মেসার্স এমএন্ডকে ট্রেডিং কর্পোরেশনের মোফাজ্জেল হোসেন মোল্লা, মো. রাহাত হোসেন, আলাউদ্দিন মোল্লা, মো. ওহিদুর হাওলাদার, মো. সুমন, মো. রমজান আলী, মেসার্স মজুমদার ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল লি. এর ইকবাল হোসেন মজুমদার, ইমরান হোসেন মজুমদার, মো. মোজাম্মেল হোসেন, মো. সাইফুল আলম চৌধুরী, আলাউদ্দিন ভূইয়া, মো. মিজানুর রহমান, মো. সেলিম, মো. ইমরান হোসেন মজুমদার, শাওয়ান শরীফ ভূইয়া, মেসার্স লাবণী এন্টারপ্রাইজের মো. রাশেদ খান, মো. রুহুল আমিন, মো. আরিফুর রহমান, মো. তোফায়েল আহমেদ, মো. নিজাম উদ্দিন মামুন ও আরিফুল ইসলাম।
কাস্টমস সূত্র জানায়, বিপুল পরিমাণ শুল্ক ফাঁকিসহ সামাজিক ও জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি সৃষ্টি করতে পারে এ ধরনের ২২টি পণ্য চালান যেগুলো কাস্টমস গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর, ঢাকা ও সেন্ট্রাল ইন্টেলিজেন্স সেল, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড ও এআইআর ইউনিট, কাস্টম হাউস, চট্টগ্রামের অনাপত্তি ব্যতীত খালাস না করার জন্য অ্যাসাইকুডা ওয়ার্ল্ড সিস্টেমে লক করা ছিল। সেগুলো কাস্টম হাউস, চট্টগ্রামের সাবেক দুই কর্মকর্তার বিপরীতে ইস্যুকৃত ইউজার আইডির গোপন পাসওয়ার্ডের লক ভেঙে ডিজিটাল জালিয়াতির মাধ্যমে পণ্য খালাস করা হয়।
শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মো. সহিদুল ইসলাম বলেন, কাস্টমস কর্মকর্তাদের নামে ইস্যুকৃত অ্যাসাইকুডা ওয়ার্ল্ড সিস্টেমের ইউজার আইডি অপব্যবহার করে (হ্যাক করে) অভিনব পন্থায় পণ্যভর্তি কন্টেইনার গায়েবের ঘটনায় গতকাল রমনা থানায় ৬৭ জনকে আসামি করে পৃথক ২০টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। জাল জালিয়াতির মাধ্যমে দেশের ৪ বন্দরে জব্দ করা পণ্যভর্তি কনটেইনার পাচারে জড়িত হ্যাকার মো. জহিরুল ইসলামকে গতকাল সিআইডির কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।