skip to Main Content
01757-856855, 01521-464854, 01752-684000 contact@pearlit.net Open 7AM - 8PM

জেনে নিন ই-পাসপোর্টের আদ্যোপান্ত

নিউজ ডেস্ক:
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সকালে ইলেকট্রনিক পাসপোর্ট বা ই-পাসপোর্ট বিতরণ কর্মসূচী কর্মসূচীর উদ্বোধন ঘোষণা করেছেন। ২০১৯ সালের জুলাই মাসে এই কর্মসূচী শুরু হওয়ার কথা থাকলেও বেশ কয়েকদফা পেছানোর পর অবশেষে বুধবার এই কর্মসূচীর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হল। কিন্তু এই ই-পাসপোর্টে কী সুবিধা হবে? প্রচলিত পাসপোর্টের সঙ্গে এর পার্থক্য কী? কিভাবে পাওয়া যাবে?

ই-পাসপোর্ট কী?

বর্তমানে এমআরপি বা যন্ত্রে পাঠযোগ্য পাসপোর্টের মতো ই-পাসপোর্টের বইও একই রকমের থাকবে। তবে যন্ত্রে পাসপোর্টের বইয়ে প্রথমে যে তথ্য সংবলিত দুইটি পাতা থাকে, ই-পাসপোর্টে তা থাকবে না। সেখানে বরং পালিমানের তৈরি একটি কার্ড ও অ্যান্টেনা থাকবে। সেই কার্ডের ভেতরে চিপ থাকবে, যেখানে পাসপোর্ট বাহকের সব তথ্য সংরক্ষিত থাকবে। ডাটাবেজে থাকবে পাসপোর্টধারীর তিন ধরণের ছবি, ১০ আঙ্গুলের ছাপ ও চোখের আইরিশ। ফলে যেকোনো দেশের কর্তৃপক্ষ সহজেই ভ্রমণকারীর সম্পর্কে সব তথ্য জানতে পারবেন।

গত জুইতে যখন প্রথম ই-পাসপোর্ট বিতরণ কর্মসূচীর তারিখ ঠিক হয়, তখন পাসপোর্ট অধিদপ্তরের ই-পাসপোর্ট প্রকল্পের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সাইদুর রহমান খান বলেছিলেন, ‘এটি অত্যন্ত নিরাপত্তা সংবলিত একটি ব্যবস্থা। যে কারণে বিশ্বের বেশিরভাগ দেশ এখন ই-পাসপোর্ট ব্যবহার শুরু করেছে। আমরাও সেই তালিকায় যুক্ত হতে যাচ্ছি।’’

এমআরপি আর ই-পাসপোর্টের পার্থক্য

মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট (এমআরপি) আর ইলেকট্রনিক পাসপোর্ট (ই-পাসপোর্ট) এর মধ্যে পার্থক্যকে তুলনা করা যেতে পারে অনেকটা চেকবই আর এটিএম কার্ডের মতো। চেকবই যেভাবে স্বাক্ষর যাচাইবাছাই করে ব্যাংক কর্মকর্তারা অনুমোদন করে টাকা প্রদান করেন। কিন্তু এটিএম কার্ড দিয়ে যে কেউ নিজে থেকেই টাকা তুলতে পারেন। তেমনি এমআরপি পাসপোর্টে ইমিগ্রেশন কর্মকর্তারা তথ্য যাচাই বাছাই করে পাসপোর্টে সিল দিয়ে থাকেন। কিন্তু ই-পাসপোর্টধারী যন্ত্রের মাধ্যমে নিজে থেকেই ইমিগ্রেশন সম্পন্ন করতে পারেন। তবে পরবর্তী ধাপে ইমিগ্রেশন কর্মকর্তারাই পাসপোর্টে আগমণ অথবা বর্হিগমন সিল দেবেন।

ই-পাসপোর্টের সুবিধা কী?

ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সাইদুর রহমান খান বলছেন, এর সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো যে, খুব দ্রুত ও সহজে ভ্রমণকারীরা যাতায়াত করতে পারবেন। ই-গেট ব্যবহার করে তারা যাতায়াত করবেন। ফলে বিভিন্ন বিমানবন্দরে তাদের ভিসা চেকিংয়ের জন্য লাইনে দাঁড়াতে হবে না। এর মাধ্যমে দ্রুত তাদের ইমিগ্রেশন হয়ে যাবে।

তবে যখন একজন ভ্রমণকারী ই-পাসপোর্ট ব্যবহার করে যাতায়াত করবেন, সঙ্গে সঙ্গে সেটি কেন্দ্রীয় তথ্যাগারের (পাবলিক কি ডাইরেক্টরি-পিকেডি) সঙ্গে যোগাযোগ করে তার সম্পর্কে তথ্য জানতে পারবে।

ই-গেটের নির্দিষ্ট স্থানে পাসপোর্ট রেখে দাঁড়ালে ক্যামেরা ছবি তুলে নেবে। থাকবে ফিঙ্গারপ্রিন্ট যাচাইয়ের ব্যবস্থাও। সব ঠিক থাকলে তিনি ইমিগ্রেশন পেরিয়ে যেতে পারবেন। তবে কোন গরমিল থাকলে লালবাতি জ্বলে উঠবে। তখন সেখানে দায়িত্বরত কর্মকর্তারা হস্তক্ষেপ করবেন। কারো বিরুদ্ধে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা থাকলে, সেটিও সঙ্গে সঙ্গে জানা যাবে।

ইন্টারন্যাশনাল সিভিল অ্যাভিয়েশন অর্গানাইজেশন (আইসিএও) এই পিকেডি পরিচালনা করে। ফলে ইন্টারপোলসহ বিমান ও স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ এসব তথ্য যাচাই করতে পারে।
এখানে ৩৮টি নিরাপত্তা বৈশিষ্ট্য থাকায় এ ধরণের পাসপোর্ট জাল করা সহজ নয় বলে তিনি জানান।

আপাতত পাঁচ ও দশ বছর মেয়াদি পাসপোর্ট দেয়ার বিষয়টি বিবেচনা করছে সরকার। বয়স ভেদে পাসপোর্টের এই মেয়াদ নির্ধারণ করা হবে।

ফি কতো হবে?

ই-পাসপোর্টের ফি কতো হবে, তা জানাতে রাজি হননি সরকারি কর্মকর্তারা। এই প্রকল্পের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের পরেই এ বিষয়ে ঘোষণা আসবে বলে তারা জানান।

তবে পাসপোর্ট অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা আভাস দিয়েছেন, ই-পাসপোর্টের ক্ষেত্রে ফি কিছুটা বেশি হতে পারে।

ই-পাসপোর্টেও কী ভিসা নিতে হবে?

প্রচলিত ব্যবস্থার মতো ই-পাসপোর্টের ক্ষেত্রে ভিসার বিষয়টি একই থাকবে। অর্থাৎ বিভিন্ন দেশের নিয়ম অনুযায়ী সরাসরি বা অনলাইনে ভিসার শর্ত পূরণ করেই ভিসা নিতে হবে।

ভিসা কর্তৃপক্ষ বা দূতাবাসগুলো এই পিকেডি ব্যবহার করে আবেদনকারীর তথ্য যাচাই করে নিতে পারবে। এরপরে তারা বইয়ের পাতায় ভিসা স্টিকার, সিল দিতে পারবে বা বাতিল করে দিতে পারবে।

এমআরপি পাসপোর্ট কী বাতিল হয়ে যাবে?

কর্মকর্তারা বলছেন, আপাতত ই-পাসপোর্টের পাশাপাশি প্রচলিত এমআরপি পাসপোর্ট ব্যবস্থাটিও বহাল থাকবে। তবে নতুন করে আর কাউকে এমআরপি পাসপোর্ট ইস্যু করা হবে না। বর্তমানে এমআরপি পাসপোর্টধারীরা যখন নবায়ন করতে যাবেন, তখন তাদেরকেও ই-পাসপোর্ট দেয়া হবে। এভাবে পর্যায়ক্রমে সব এমআরপি পাসপোর্ট তুলে নেয়া হবে।

ই-পাসপোর্ট যেভাবে পাওয়া যাবে

পাঁচ ও ১০ বছর মেয়াদ হবে ই-পাসপোর্টের। পাসপোর্টের পৃষ্ঠাসংখ্যাও হবে দুই ধরনের, ৪৮ ও ৬৪ পৃষ্ঠা। নতুন আবেদনকারীদের ক্ষেত্রে পাসপোর্ট বিতরণের পদ্ধতি তিন ধরনের- সাধারণ, জরুরি ও অতি জরুরি।

দেশের অভ্যন্তরে সাধারণ আবেদনের ক্ষেত্রে পুলিশ ক্লিয়ারেন্স দিলে এবং অন্যান্য তথ্য সঠিক থাকলে পাসপোর্ট পাওয়া যাবে ২১ কর্মদিবসের মধ্যে। জরুরিভাবে পাসপোর্ট আবেদনের ক্ষেত্রে পুলিশ ক্লিয়ারেন্স দিলে এবং অন্যান্য তথ্য ঠিক থাকলে সাত কর্মদিবসের মধ্যে পাসপোর্ট দেওয়া হবে।

অতি জরুরি পাসপোর্ট ৭২ ঘণ্টা বা তিন দিনের মধ্যে দেওয়া হবে। এ ক্ষেত্রে পাসপোর্টের আবেদনকারীকে নিজ উদ্যোগে পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সনদ সংগ্রহ করে আবশ্যিকভাবে আবেদনের সঙ্গে জমা দিতে হবে। তবে পুরনো অথবা মেয়াদোত্তীর্ণ পাসপোর্ট নবায়নের ক্ষেত্রে অতীব জরুরি পাসপোর্ট দুই দিনে, জরুরি পাসপোর্ট তিন দিনে এবং সাধারণ পাসপোর্ট সাত দিনের মধ্যে দেওয়া হবে।

বাংলাদেশে আবেদনকারীদের জন্য ৪৮ পৃষ্ঠার পাঁচ বছর মেয়াদি সাধারণ ফি তিন হাজার ৫০০ টাকা, জরুরি ফি পাঁচ হাজার ৫০০ টাকা ও অতীব জরুরি ফি সাত হাজার ৫০০ টাকা এবং ১০ বছর মেয়াদি সাধারণ ফি পাঁচ হাজার টাকা, জরুরি ফি সাত হাজার টাকা ও অতীব জরুরি ফি ৯ হাজার টাকা। এছাড়া ৬৪ পৃষ্ঠার পাঁচ বছর মেয়াদি সাধারণ ফি পাঁচ হাজার ৫০০ টাকা, জরুরি ফি সাত হাজার ৫০০ টাকা ও অতীব জরুরি ফি ১০ হাজার ৫০০ টাকা এবং ১০ বছর মেয়াদি সাধারণ ফি সাত হাজার টাকা, জরুরি ফি ৯ হাজার টাকা ও অতীব জরুরি ফি ১২ হাজার টাকা।

ই-পাসপোর্ট করতে যা লাগবে

ই-পাসপোর্টের আবেদনপত্র পূরণ করতে হবে জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) বা জন্ম নিবন্ধন সনদ (বিআরসি) অনুযায়ী। অপ্রাপ্তবয়স্ক (১৮ বছরের কম) আবেদনকারী, যার জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) নেই, তার মা-বাবার জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) নম্বর অবশ্যই উল্লেখ করতে হবে।

Shahadat Hossen

Shahadat Hossen

Hello! I’m Md. Shahadat Hossen. I'm a Journalist, Web Designer, Entrepreneur, Founder at Tech Express & Pearl IT Limited. I started journalism from 2012. In the 2018, started Web Development Company Pearl IT. As a Journalist i Work Bangladeshi popular and oldest online news portal Bangladesherpatro.com. He was worked Dainik Desherpatro, The Dhaka Daily.