ভিডিও স্ট্রিমিং প্ল্যাটফরম ইউটিউবে আপত্তিকর কমেন্টকারীদের বিরুদ্ধে এবার ব্যবস্থা নেবে প্রতিষ্ঠানটি। কুরুচিকর মন্তব্য করলেই সতর্কবার্তা…
ভারত সরকারের বিরুদ্ধে হোয়াটসঅ্যাপের মামলা
নিউজ ডেস্ক:
ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের নতুন ডিজিটাল আইনের বিরুদ্ধে দিল্লি হাইকোর্টে মামলা করেছে ফেসবুক নিয়ন্ত্রণাধীন মেসেজিং অ্যাপ হোয়াটসঅ্যাপ। তাদের অভিযোগ, নতুন আইন মেনে নিলে ব্যবহারকারীদের ব্যক্তিগত গোপনীয়তা লঙ্ঘন করতে হবে। খবর ব্লুমবার্গ ও গার্ডিয়ান।
সময়সীমা শেষ হওয়ায় বুধবার থেকে ভারতে নতুন ডিজিটাল আইন কার্যকর হচ্ছে। এর আগে ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ ও টুইটারকে নতুন ডিজিটাল আইন মেনে নেওয়ার জন্য তিন মাসের সময় বেঁধে দিয়েছিল দেশটির কেন্দ্রীয় সরকার। সরকারের এ আগ্রাসী সিদ্ধান্তের ফলে হোয়াটসঅ্যাপ ও সিগন্যালের মতো পার্সন টু পার্সন এনক্রিপটেড মেসেজেও খবরদারি করতে পারবে সরকার।
আদালতে দায়ের করা অভিযোগপত্রে হোয়াটসঅ্যাপ বলছে, ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের নতুন ডিজিটাল আইনটি উচ্চ আদালতে অবৈধ ঘোষণা করা উচিত। কারণ তারা চাইলে কোনো মেসেজ আগে কে পাঠিয়েছেন সেটি জানতে পারবেন। এর ফলে ব্যবহারকারীদের নিরাপত্তা লঙ্ঘন হবে। আইনটি ভারতের সংবিধানের বরখেলাপ এবং নাগরিকের ব্যক্তিগত গোপনীয়তা লঙ্ঘনের সামিল। এতে ২০১৭ সালে করা সুপ্রীম কোর্টের একটি রুলিং ভঙ্গ হবে।
গত মঙ্গলবার অবশ্য ফেসবুক জানিয়েছিল তারা ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের নতুন আইনটি মেনে নেবে। ইতোমধ্যে ব্যবহারকারীর তথ্য শেয়ারের প্রক্রিয়া শুরু করেছে তারা। প্রশ্ন উঠেছে, ফেসবুক মালিকানাধীন হোয়াটসঅ্যাপ কেন দিল্লি হাইকোর্টে মামলা করল? এক বিবৃতিতে এ প্রশ্নের জবাব দিয়েছে ফেসবুক মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানটি। তারা বলেছে, ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের নতুন ডিজিটাল আইনে ব্যবহারকারীদের ব্যক্তিগত তথ্যের সুরক্ষা দেওয়া সম্ভব হবে না।
প্রথমবারের মতো কোন দেশের সরকারের বিরুদ্ধে মামলা করলো হোয়াটসঅ্যাপ। ব্যবহারকারীদের ব্যক্তিগত গোপনীয়তা সুরক্ষা ইস্যুতে এর আগে ব্রাজিলের সঙ্গেও বিরোধে জড়িয়েছিল ফেসবুক মালিকানাধীন প্ল্যাটফর্মটি। বেশ কয়েকবার লাতিন আমেরিকার সবচেয়ে বড় দেশটিতে হোয়াটসঅ্যাপের সেবা বন্ধ করে দেয়া হয়েছিল।
উল্লেখ্য, ভারতে হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহারকারীর সংখ্যা ৫০ কোটিরও বেশি। ব্যবহারকারীর গোপনীয়তা কীভাবে রক্ষা করা যায় সে বিষয়ে প্রতিষ্ঠানটি প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে কয়েক দফা বৈঠক করেছেন। একই সঙ্গে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গেও এ বিষয়ে আলোচনা চলছে বলে বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়।
গত কয়েক বছর ধরেই সোসাল মিডিয়াগুলোর রাশ টেনে ধরার চেষ্টা করছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি নেতৃত্বাধীন সরকার। কভিড-১৯ মোকাবেলায় সরকারের ব্যর্থতা নিয়ে সামাজিক মাধ্যমগুলোতে সমালোচনা নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা চালাচ্ছে তারা। ভারতের প্রচলিত প্রযুক্তি কোম্পানীগুলোর সঙ্গে সরকারের উত্তেজনা চলতি সপ্তাহে চূড়ায় পৌছেছে।
মাইক্রোব্লগিং সাইট টুইটারের সঙ্গে গত কয়েক মাস ধরেই মোদি প্রশাসনের টানাপড়েন চলছিল। সরকারের সমালোচনামূলক এবং কভিড-১৯ রেকর্ড নিয়ে বিভিন্ন পোস্ট সরাতে চাপ দিয়ে আসছিল তারা। গত মাসে ভারত সরকারের দাবি মোতাবেক ৫০টিরও বেশি পোস্ট সরিয়েছিল টুইটার। এমনকি চলতি বছরের শুরুতে কৃষক আন্দোলনের সময় ৫০০টিরও বেশি অ্যাকাউন্ট স্থায়ীভাবে বন্ধ করে দিয়েছিল।
This Post Has 0 Comments