ভিডিও স্ট্রিমিং প্ল্যাটফরম ইউটিউবে আপত্তিকর কমেন্টকারীদের বিরুদ্ধে এবার ব্যবস্থা নেবে প্রতিষ্ঠানটি। কুরুচিকর মন্তব্য করলেই সতর্কবার্তা…
মোবাইল ব্যাংকিং সার্ভিস চার্জ সিঙ্গেল ডিজিট করার দাবি
নিজস্ব প্রতিবেদক:
মোবাইল ব্যাংকিং এর সার্ভিস চার্জ সিঙ্গেল ডিজিট করা এবং গ্রাহকদের অর্থের নিরাপত্তা জোরদারসহ পাঁচ দফা দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ মুঠোফোন গ্রাহক এসোসিয়েশন। এ খাতের বাজারে প্রতিযোগিতাপূর্ণ পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে মোবাইল ফোন অপারেটরদের ন্যায় মোবাইল ব্যাংকি-এ এসএমপি বাস্তবায়ন, এ খাতের সকল সেবার ওপর ভ্যাট ১৫ শতাংশ থেকে নামিয়ে ৫ শতাংশে নির্ধারণ এবং আন্তঃলেনদেন চার্জ মুক্ত রাখার দাবি জানানো হয়েছে।
শনিবার (১৪ নভেম্বর) সকাল ১১টায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির নসরুল হামিদ মিলনায়তনে ‘মোবাইল ব্যাংকিং এর যৌক্তিক সার্ভিস চার্জ নির্ধারণ, চার্জমুক্ত আন্তঃ লেনদেন ও গ্রাহক নিরাপত্তায় করণীয় শীর্ষক আলোচনা সভায়’ বক্তারা এ দাবি জানান।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিটিআরসি’র ভাইস চেয়ারম্যান সুব্রত রয় মিত্র বলেন, নগদ সার্ভিস চার্জ কমিয়ে আমাদের চোখ খুলে দিয়েছে। সার্ভিস চার্জ যে কমানো সম্ভব এতদিন বোঝা যায়নি। নগদ যেহেতু সার্ভিস চার্জ কমাতে সক্ষম হয়েছে তার মানে অন্যরাও চাইলে কমাতে পারবেন। এ ব্যাপারে বাংলাদেশ ব্যাংকের কস্ট মডেলিং করে যৌক্তিক সার্ভিস চার্জ নির্ধারণ করা উচিত।
মোবাইল ব্যাংকিংয়ে ক্যাশ-আউট রেট শুরু থেকে হাজারে সাড়ে আঠারো টাকা করা হলেও ডাক বিভাগের সেবা ‘নগদ’ সম্প্রতি সেটি দশ টাকার নিচে নামিয়ে এনেছে। তাছাড়া অন্য অপারেটরগুলো নিজেদের মধ্যে প্রতিটি লেনদেনে ৫ টাকা করে চার্জ করলেও ‘নগদ’ সেটি ফ্রি করে দিয়েছে।
টেলিফোনে যুক্ত হয়ে সৈয়দ আবুল মকসুদ প্রান্তিক পর্যায়ের মানুষকে স্বস্তি দিতে সরকারকে সার্ভিস চার্জ কমানোর বিষয়টি বিবেচনা করতে অনুরোধ জানান।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ডাকবিভাগের মোবাইল ব্যাংকিং সেবা নগদ’র চীফ সেলস্ অফিসার শেখ আমিনুর রহমান বলেন, নগদ সরকারের সহযোগিত প্রতিষ্ঠান হিসেবে লাভের কথা চিন্তা না করে জনগণের সাধ্য ও সামর্থ্যরে কথা চিন্তা করে সার্ভিস চার্জ কমিয়েছে। আশা রাখি আগামীতে নগদ আরো জনবান্ধব কার্যক্রম পরিচালনা করবে। গ্রাহক নিরাপত্তার বিষয়ে তিনি কেন্দ্রীয় ব্যাংক, বিটিআরসি, অপারেটর ও গ্রাহককে সতর্ক ও সচেতন থাকার আহ্বান জানান।
এসময় বিটিআরসি’র সার্ভিস বিভাগের পরিচালক লে. ক. মো. আজিজুর রহমান সিদ্দিকী বলেন, এমএফএস প্রতিষ্ঠান রিটেইলার ও ডিস্ট্রিবিউটর কর্তৃক গৃহীত চার্জের সঠিক কস্ট মডেলিং জরুরী প্রয়োজন। ১.৮৫ শতাংশ সার্ভিস চার্জের বাকী ০.০১৫ টাকার কখনো কোন হিসাব পাওয়া যায় না। এ হিসাবে অনৈতিক ভাবে প্রায় ৩৫০ কোটি টাকা গ্রাহকদের কাছ থেকে নেয়া হয়েছে। যার কোন সঠিক হিসাব কারো কাছে নাই। যতক্ষণ পর্যন্ত এই অংক কোন বাস্তব লেনদেন সম্পন্ন ফিগারে পরিবর্তন করা না হবে ততক্ষণ পর্যন্ত গ্রাহক ক্ষতিগ্রস্ত হতে থাকবে।
অনলাইনে যুক্ত হয়ে বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ড. সায়মা হক বিদিশা বলেন, দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি ও বাস্তবতা বিবেচনায় বর্তমান সার্ভিস চার্জ মোটেও যুক্তিসঙ্গত নয়। সার্ভিস চার্জ নির্ধারণে সকল স্টেক হোল্ডারদের মতামতের ভিত্তিতে ন্যায় সঙ্গত চার্জ নির্ধারণ করতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নেবে বলে আমি আশা করি।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইবিএ’র সহযোগী অধ্যাপক খালেদ মাহমুদ বলেন, বাংলাদেশ সরকারের এই মুহুর্তেই অতিরিক্ত মাশুল বা ইন্টার অপারেবেলিটি চার্জ দেওয়া ঠিক হবে না। তবে হ্যাঁ পর্যায়ক্রমে ধীরে ধীরে এই চার্জ প্রয়োগ করা যেতে পারে। মার্কেট কম্পিটিশনকে বাঁচিয়ে রাখতে এসএমপি বাস্তবায়ন করার কোন বিকল্প নেই। ডিজিটাল সিকিউরিটি নিশ্চিত করার জন্য আজ থেকে অবশ্যই ডিজিটাল অডিট চালু করা উচিত। বাংলাদেশ সরকারের আইসিটি ডিভিশন বা বিটিআরসি’র এই ডিজিটাল অডিট বাধ্যতামূলককরণের ক্ষেত্রে কঠোর নীতিমালা প্রয়োগ করা উচিত।
সিপিবি’র সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেন, মোবাইল ব্যাংকিং এখনকার বাস্তবতা। এটি যাতে কম খরচে নিরাপত্তার সাথে ব্যবহার করা যায় সেই ব্যবস্থা সরকারকে করতে হবে। একটি প্রতিষ্ঠান যে সার্ভিস চার্জ নিচ্ছে তা আমাদের দেশের বাস্তবতার সাথে অযৌক্তিক। সরকারি প্রতিষ্ঠানও এ কাজ স্বচ্ছতার সাথে করতে পারছে না। তিনি যৌক্তিক সার্ভিস চার্জ নির্ধারণ ও সব প্রতিষ্ঠানের স্বচ্ছতা নিশ্চিত করার দাবি জানান।
সমকালের বিশেষ প্রতিনিধি রাশেদ মেহেদী বলেন, বিকাশ ব্র্যাক ব্যাংকের সহযোগী প্রতিষ্ঠান হলেও মূলত এটি একটি কুরিয়ার সার্ভিসের কাজ করে যাচ্ছে। সরকারের সহযোগী প্রতিষ্ঠান নগদকে একই কাজ না করার জন্য সুপারিশ করছি।
মূল বক্তব্যে সংগঠনের সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, ২০০৯ সালে সরকার ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণে ভিশন-২০২১ ঘোষণা করে। এরই ধারাবাহিকতায় ২০১১ সালের মে মাসে ডাচ বাংলা ব্যাংক লিমিটেডের মাধ্যমে বাংলাদেশে মোবাইল ব্যাংকিং সার্ভিস (এমএফএস) সেবা চালু হয়। একই বছর জুলাই মাসে ব্র্যাক ব্যাংকের মাধ্যমে আসে বিকাশ। ইতোমধ্যে এ সেবায় বাংলাদেশ বিশ্বে ২য় স্থানে অবস্থান করছে। প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে ব্যাংকিং সেবা প্রদানই ছিল এর মূল লক্ষ্য। তাছাড়া দ্রুত সময়ে নিরবচ্ছিন্ন সেবা প্রাপ্তিতে এই সেবার তুলনা হয় না। মূলত মোবাইল ব্যাংকিং হল মোবাইল ফোনের মাধ্যমে ব্যাংক অ্যাকাউন্টের যাবতীয় কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণ করার সুবিধাযুক্ত সেবা।
তিনি বলেন, মোবাইল ব্যাংকিং সেবা বাণিজ্যিক ব্যাংকে লেনদেনের হয়রানি, দীর্ঘ সময় ব্যয়, যাতায়াতের ঝামেলা মুক্ত করলে এ সেবা খাতের অযৌক্তিক সার্ভিস চার্জ ও নিরাপত্তা ঝুঁকি গ্রাহকদেরকে বিপর্যস্ত করে তুলেছে। ২০১৪ সাল থেকে আমরা সার্ভিস চার্জ কমিয়ে যৌক্তিক পর্যায়ে আনতে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে আসছি। কিন্তু একটি প্রতিষ্ঠানে ৭০ শতাংশ বাজার দখলে থাকায় সার্ভিস চার্জ কমিয়ে আনা সম্ভবপর হয়নি। বাংলাদেশ ব্যাংকের গাইডলাইনে সার্ভিস চার্জের ফ্লোর রেট ও সিলিং রেট নির্ধারিত না থাকায় এতদিন পর্যন্ত একটি প্রতিষ্ঠান মনোপলি ব্যবসা করে আসছে। অবশেষে ডাকবিভাগের মোবাইল ব্যাংকিং সার্ভিস প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান নগদ সার্ভিস চার্জ কমিয়ে এনেছে। এতে করে গ্রাহকরা মনোপলির হাত থেকে রক্ষা পেয়ে কিছুটা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলছে বলে আমরা মনে করি।
কোনো গ্রাহক যখন একবার টাকা ক্যাশ ইন করে তখন প্রতি হাজারে এজেন্ট বা রিটেলার কমিশন পায় ৪.১০ টাকা আরডিলার কমিশন পায় ১.৪০ টাকা। আবার যখন ক্যাশ-আউট করে তখনো এই একই খরচ হয়। তারওপর ম্যাসেজ চার্জ বাবদ মোবাইল অপারেটর পায় ০.০৬৪ টাকা, সেই সাথে ভ্যাট ১৫% বাকিটা এমএফএস প্রতিষ্ঠানের লভ্যাংশ। কিন্তু এর বিপরীতে হাজারে ১৮.৫০ টাকা করে ক্যাশ-আউট চার্জ নিয়ে অন্য অপারেটরগুলো দেদার মুনাফা করছে। সেখানে খরচগুলোকে সামান্য কমিয়ে ভ্যাটবাদে ‘নগদ’ নিচ্ছে ৯ টাকা ৯৯ পয়সা। এরপরেও তারা এখান থেকে আয় করছে। তাহলে আমাদের প্রশ্ন এতদিন যাবত একটি প্রতিষ্ঠানে হাজারে ১৮.৫০ টাকা নিয়ে কি পরিমাণ মুনাফা লুটে নিয়েছে গ্রাহকদের কাছ থেকে তা ভাবতেও অবাক লাগে। এর সাথে তাল মিলিয়ে রিটেলাররাও অনৈতিক ভাবে গ্রাহকদের কাছ থেকে অর্থ হাতিয়ে নিয়েছে। নগদ আমাদের চোখ খুলে দিয়েছে নিশ্চয়ই। বাংলাদেশ ব্যাংক আর্থিক নিয়ন্ত্রক কমিশন হলেও সার্ভিস প্রদানের নিয়ন্ত্রক সংস্থা হিসেবে বিটিআরসির ভূমিকাও অগ্রগণ্য।
মোবাইল ব্যাংকিংয়ের দুর্বল দিক হচ্ছে এর উচ্চ হারের মাসুল (সার্ভিস চার্জ) এবং অরক্ষিত এজেন্ট। তাদের মাধ্যমে সংঘটিত প্রতিটি লেনদেনে প্রতি হাজারে ২০ টাকা পর্যন্ত মাসুল দিতে হয়। এর পরও দৈনিক এক হাজার ৩০০ কোটি টাকা লেনদেন হচ্ছে এ সেবার মাধ্যমে। এতেই বোঝা যায় এ সেবার পরিধি কতটা ব্যাপক। মোবাইল ফিন্যানশিয়াল সার্ভিসগুলোর (এমএফএস) সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানগুলো বলছে, যে মাসুল আদায় হয়, তার ৬০ শতাংশের বেশি এজেন্টদের দেওয়া হয়। এরপর নেটওয়ার্ক খরচ দিতে হয়। বাকিটা প্রতিষ্ঠান পরিচালনাতে খরচ হয়। দিন শেষে মুনাফা হয় খুব কম। তবে দিন শেষে এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলোর হিসাবে তিন হাজার কোটি টাকার বেশি জমা থাকছে। এসব অর্থের সুদ থেকেই মুনাফা করছে প্রতিষ্ঠানগুলো।
ব্যাংকের মাধ্যমে এক অ্যাকাউন্ট থেকে আরেক অ্যাকাউন্টে টাকা পাঠানো হলে কোনো ধরনের মাসুল দিতে হয় না। একই ব্যাংকের অন্য অ্যাকাউন্টে পাঠালে তা তৎক্ষণাৎ পৌঁছে যায়। এক ব্যাংক থেকে অন্য ব্যাংকের গ্রাহকের হিসাবে টাকা পাঠালে কোনো মাসুল লাগে না। কেন্দ্রীয় ব্যাংক ক্লিয়ারিং হাউস আধুনিকায়ন করায় লেনদেনের সময় কমে এসেছে। অদূর ভবিষ্যতে একই দিনের মধ্যে যেকোনো ব্যাংকের যেকোনো শাখায় তৎক্ষণাৎ টাকা পৌঁছে যাবে। প্রথাগত ব্যাংকিং যেখানে বিনা মাসুলে দুই গ্রাহকের মধ্যে লেনদেন করার সুযোগ দিতে পারে, সেখানে মোবাইল ব্যাংকিং এত উচ্চ হারে মাসুল নেবে কেন?
মোবাইলে আর্থিক সেবাদাতা (এমএফএস) প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে আন্তলেনদেন সুবিধা চালু হচ্ছে। ফলে এখন থেকে নগদ, বিকাশ, রকেট, এম ক্যাশ ও ইউক্যাশের মতো এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলো নিজেদের মধ্যে লেনদেন করতে পারবে। পাশাপাশি ব্যাংক ও এমএফএসের মধ্যেও করা যাবে লেনদেন। বর্তমানে এক ব্যাংক থেকে অন্য ব্যাংকে টাকা পাঠানো যায়। কিন্তু এক এমএফএস থেকে অন্য এমএফএসে টাকা পাঠানো যায় না। অর্থাৎ বিকাশ গ্রাহকরা নগদে কিংবা রকেটে, নগদ গ্রাহকরা বিকাশ কিংবা রকেটে, রকেট গ্রাহকরা বিকাশ কিংবা নগদে টাকা পাঠাতে পারতেন না। এ দুটি সেবা চালু হলে গ্রাহকেরা সহজেই ব্যাংক থেকে এমএফএস সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানের হিসাবে এবং এমএফএস প্রতিষ্ঠান থেকে ব্যাংকে টাকা স্থানান্তর করতে পারবেন। এই সেবার জন্য গ্রাহকদের কাছ থেকে কোনো মাশুল নেওয়া যুক্তি সংগত নয় বলে আমরা মনে করি। টাকা উত্তোলনের খরচ থাকছে আগের মতোই। আপাতত চারটি ব্যাংক ও চারটি এমএফএস প্রতিষ্ঠান এই সেবায় যুক্ত হয়েছে। অন্যদের আগামী বছরের ৩১ মার্চের মধ্যে আন্তঃলেনদেন ব্যবস্থায় যুক্ত হওয়ার নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এর মধ্য দিয়ে দেশে ডিজিটাল ব্যাংকিং সেবায় আরেক ধাপ যুক্ত হল।
বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, দেশে নগদ অর্থের লেনদেন কমাতে সব ব্যাংক ও এমএফএস প্রতিষ্ঠানের মধ্যে আন্তলেনদেন সেবা বাস্তবায়নের কাজ চলছে। সফলভাবে পরীক্ষামূলক কার্যক্রম সম্পন্নকারী ব্যাংক ও এমএফএস প্রতিষ্ঠান থেকে লেনদেন শুরু করবে। যারা প্রস্তুতি সম্পন্ন করতে পারেনি, তাদের আগামী বছরের ৩১ মার্র্চের মধ্যে এ সেবা চালু করতে হবে।প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়েছে, যে এমএফএস প্রতিষ্ঠানের হিসাব থেকে অর্থ এমএফএস প্রতিষ্ঠানের হিসাবে যাবে, সেই প্রতিষ্ঠান অর্থ প্রেরণকারী এমএফএস প্রতিষ্ঠানকে লেনদেন হওয়া অর্থের০.৮০ শতাংশ (হাজারে ৮ টাকা) হারে মাশুল দেবে। একইভাবে ব্যাংক হিসাব হতে এমএফএস হিসাবে এবং এমএফএস হিসাব থেকে ব্যাংক হিসাবে অর্থ স্থানান্তরের উভয় ক্ষেত্রেই এমএফএস প্রতিষ্ঠান সংশ্লিষ্ট ব্যাংককে লেনদেন করা অর্থের০.৪৫ শতাংশ (হাজারে ৪.৫০ টাকা) মাশুল প্রদান করবে।আন্তঃলেনদেনের জন্য অতিরিক্ত এ চার্জ গ্রাহকদের জন্য বোঝা স্বরূপ। তাই আন্তঃলেনদেনের এ চার্জ সম্পূর্ণভাবে প্রত্যাহার করতে হবে।
বর্তমান সময়ে মোবাইল ব্যাংকিং এর সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে যৌক্তিক সার্ভিস চার্জ নির্ধারণ ও নিরাপদ লেনদেন। একেক কোম্পানির একেক সার্ভিস চার্জ কোন প্রকার যৌক্তিকতা বহন করে না। মোবাইল ব্যাংকিং এর সার্ভিস চার্জ সিঙ্গেল ডিজিটে নামিয়ে আনা এখন সময়ের দাবি। করোনা জর্জরিত অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে এমন পদক্ষেপ খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। গ্রামীণ অর্থনীতিতে গতির সঞ্চার হবে। আমরা মোবাইল ব্যাংকিং এর সার্ভিস চার্জ সিঙ্গেল ডিজিটে নির্ধারণ করে দেওয়ার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতি আহ্বান জানাই। বর্তমানে আন্তঃলেনদেন বা সেন্ড মানি করতেও কোম্পানীগুলো সার্ভিস চার্জ হিসেবে ৫ টাকা কেটে নিচ্ছে। নগদ ইতিমধ্যে ঘোষণা দিয়েছে সেন্ডমানি চার্জ তারা কাটবে না। আমরা আশারাখি অন্য প্রতিষ্ঠানগুলো সেন্ডমানি চার্জ নেয়া বন্ধ করবে। আমরা চার্জমুক্ত আন্তঃলেনদেনের দাবি জানাচ্ছি।
মোবাইল ব্যাংকিং সেবার সিংহভাগ গ্রাহকের এ সেবা সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণা নেই। ফলে অনেক সময় তারা প্রতারিত হচ্ছেন। হ্যাকারা গ্রাহকদের বিভ্রান্ত করে পিন নাম্বার নিয়ে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। অনেক সময় কল করে মিথ্যা প্রলোভনে টাকা নিয়ে নেয়া হচ্ছে। অনেক এজেন্ট প্রতারক চক্রের সাথে জড়িয়ে পড়ছেন। ফলে লেনদেনের নিরাপত্তা ব্যবস্থার প্রচুর ঘাটতি রয়েছে। মোবাইল ব্যাংকিং কে নিরাপদ করতে সংশ্লিষ্ট সকলকে এগিয়ে আসতে হবে, কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।
পাঁচ দফা দাবি:
১. মোবাইল ফোন অপারেটরদের ন্যায় মোবাইল ব্যাংকি-এ এসএমপি বাস্তবায়ন করতে হবে।
২. ভ্যাট ৫ শতাংশ করতে হবে।
৩. ক্যাশ আউট চার্জ সিঙ্গেল ডিজিটে নামিয়ে আনতে হবে এবং সেন্ড মানি চার্জ বাতিল করতে হবে।
৪. আন্তঃলেনদেন চার্জ মুক্ত রাখতে হবে।
৫. লেনদেনের ক্ষেত্রে গ্রাহকদের পূর্ণ নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।
আলোচনা সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন দৈনিক ইনকিলাবের সিনিয়র সাংবাদিক ফারুক হোসাইন, মোবাইল রিচার্জ ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলু, বাংলাদেশ মুঠোফোন গ্রাহক এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক আবু বকর সিদ্দিক, মহিলা বিষয়ক সম্পাদক সীমা আক্তার, কেন্দ্রীয় সদস্য আমানুল্লাহ মাহফুজ, মুর্শিদুল হক বিদ্যুৎ প্রমুখ।
This Post Has 0 Comments