ভিডিও স্ট্রিমিং প্ল্যাটফরম ইউটিউবে আপত্তিকর কমেন্টকারীদের বিরুদ্ধে এবার ব্যবস্থা নেবে প্রতিষ্ঠানটি। কুরুচিকর মন্তব্য করলেই সতর্কবার্তা…
যেভাবে হ্যাকিং থেকে রক্ষা করবেন সোশ্যাল অ্যাকাউন্ট
নিজস্ব প্রতিবেদক, টেক এক্সপ্রেস:
ডিজিটাল যুগে স্মার্টফোন হয়ে উঠেছে এক অতি প্রয়োজনীয় যোগাযোগ উপকরণ। আর এ স্মার্টফোন থেকেই ব্যবহার করা হয় সোশ্যাল মিডিয়া বা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম। হোয়াটসঅ্যাপ, ফেসবুক, টুইটার, ইউটিউব, ইনস্টাগ্রাম কিংবা লিঙ্কডইন-কখনো কাজের ক্ষেত্রে, কখনো বা আবার পুরোনো বন্ধুদের সঙ্গে যোগাযোগই হোক কিংবা একান্তই চাপে পড়ে চাকরির খোঁজ-সোশ্যাল মিডিয়া আমাদের জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হয়ে দাঁড়িয়েছে হাল জমানায়। এই সোশ্যাল মিডিয়া যেমন আমাদের উপকারও করে, ঠিক তেমনি আবার অনেক সময় অপকারের কাজেও ব্যবহৃত হয়।
২০১৯ সালে ফেসবুকের বিরুদ্ধে ব্যবহারকারীদের তথ্য চুরির অভিযোগ উঠেছিল। কয়েক দিন আগেই টুইটার অ্যাকাউন্ট হ্যাক হওয়ার অভিযোগ করেছেন অনেকেই। আর এ হ্যাক হওয়ার বিষয়টি যথেষ্টই উদ্বেগজনক। কারণ, সোশ্যাল মিডিয়ার অ্যাকাউন্ট একবার হ্যাক হয়ে গেলে হ্যাকারদের হাতে চলে যায় অনেক গোপন তথ্য। সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়া এ খবর জানিয়েছে।
তাই সোশ্যাল মিডিয়াকেই কীভাবে হ্যাকারের হাত থেকে নিরাপদে রাখা যাবে, তা নিয়ে বিশেষজ্ঞদের শেয়ার করা কিছু টিপস দেওয়া হলো।
শক্তিশালী পাসওয়ার্ড বাছাই করুন:
বারবারই অ্যাকাউন্টের নিরাপত্তা আরো জোরদার করার কথা বলে এসেছেন প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞরা। কিন্তু কীভাবে অ্যাকাউন্টের নিরাপত্তা বজায় রাখবেন? প্রথমত, সহজে অনুমান করা যায় এমন পাসওয়ার্ড ব্যবহার করবেন না। মোটামুটি বড় নম্বর ও বিশেষ চিহ্ন (@#$*) মিলিয়ে পাসওয়ার্ড দিতে হবে। তবে অনেকেই আবার বড় নম্বর বলতে নিজের ফোন নম্বর দিয়ে থাকেন। সে কাজও করবেন না। কারণ, আপনার ফোন নম্বর চাইলে জোগাড় করে নিতে পারে হ্যাকাররা। পাসওয়ার্ড একান্তই ব্যক্তিগত, সুতরাং এর গোপনীয়তা রক্ষা করতে হবে আপনাকেই। পরিবার, বন্ধু কিংবা কাছের কারো সঙ্গেও এটি শেয়ার করা যাবে না। আর রাস্তাঘাটে যতটা সম্ভব ফেসবুক বা টুইটার কিংবা যেকোনো সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করা যতটা সম্ভব এড়িয়ে চলুন।
টু ফ্যাক্টর অথেনটিকেশন:
অনলাইনে বিভিন্ন ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করার জন্য দুই স্তরবিশিষ্ট নিরাপত্তা বা টু-ফ্যাক্টর অথেনটিকেশন চালু করতে পারেন। এতে কোনোভাবেই হ্যাক হবে না আপনার সোশ্যাল মিডিয়া। এই ফিচার চালু থাকলে নতুন কোনো ডিভাইস থেকে লগ-ইন করার সময় পাসওয়ার্ডের পাশাপাশি অ্যাকাউন্টে যুক্ত মোবাইল নম্বরে আসা ওয়ান-টাইম পাসওয়ার্ড (ওটিপি) পাঠানো হয়। সোশ্যাল মিডিয়া প্রোফাইলের জন্য এ পদ্ধতি মেনে চলতে পারলে হ্যাকারের হানা থেকে নিস্তার মিলবে।
ভালোভাবে যাচাই করার পর বন্ধুত্ব পাতান:
সামাজিক মাধ্যমে বন্ধু নির্বাচনে সতর্কতা অবলম্বন করা খুবই জরুরি। কারণ, কে কোন অপরাধ কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত, তা বোঝা যায় না। এ ছাড়া হ্যাকারদের চরও ফাঁদ পেতে বসে থাকে সোশ্যাল মিডিয়ায়। সুতরাং অপরিচিত কারো সঙ্গে বন্ধু পাতানোর আগে ভালো করে যাচাই করে নিতে হবে। সন্দেহ থাকলে ওই পথে হাঁটাই যাবে না। অনেক সময় আবার মিথ্যা পরিচয়ে আপনার বন্ধু হয়ে কোনো হ্যাকার ঢুকে আপনার টাইমলাইনে স্প্যাম ছড়াতে পারে। আপনাকে বিব্রতকর পোস্টে ট্যাগ করতে পারে কিংবা হ্যাকিংয়ের মেসেজ পাঠাতে পারে।
সন্দেহজনক লিঙ্ক এড়িয়ে চলুন:
যদি ঘনিষ্ঠ কোনো বন্ধু বা ফেসবুকে কোনো বন্ধুর কাছ থেকে ই-মেইল বা মেসেঞ্জারে কোনো বার্তা পান বা কোনো লিঙ্ক শেয়ার করা হয়, যা হয়তো তার স্বাভাবিক আচরণের সঙ্গে মেলে না, সবচেয়ে ভালো হবে সে লিঙ্কে ক্লিক না করা বা সাড়া না দেওয়া। কেউ হয়তো লিখতে পারে যে সে কোথাও বেড়াতে গিয়ে বিপদে পড়েছে অথবা আপনার মেসেঞ্জারে এমন কোনো লিঙ্ক পাঠিয়েছে, যা আসলে সন্দেহজনক। এ ক্ষেত্রে তাকে আলাদাভাবে অ্যাকাউন্টে নক করে বা বার্তা পাঠিয়ে জিজ্ঞেস করতে পারেন। এ ধরনের সন্দেহজনক কিছু দেখলে রিপোর্ট করার পরামর্শ দিচ্ছে ফেসবুক।
আবেগের বশে অতিরিক্ত শেয়ার বন্ধ করুন:
আবেগী হয়ে ফেসবুকে কিংবা অন্য কোনো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অতিরিক্ত পোস্ট শেয়ার করা যাবে না। আগে ভালোভাবে যাচাই করে, তারপরই তা শেয়ার করবেন। ফেসবুক ও ইনস্টাগ্রামে পোস্ট করার সময় বন্ধুকে ট্যাগ বা লোকেশন সেট করার আগে কোনটি ব্যক্তিগত আর কোনটি সবার জন্য, তা ভালো করে দেখে নিতে হবে। কোনো তৃতীয় পক্ষ যাতে আপনার তথ্য ব্যবহার করে সুবিধা নিতে না পারে বা আপনার অবস্থানগত তথ্য জানাজানি হয়ে গেলে আপনাকে যেন কোনো ঝামেলায় না জড়িয়ে পড়তে হয়, সে বিষয়ে সতর্ক থাকুন। বিশেষজ্ঞদের মতে, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যক্তিগত সংবেদনশীল ছবি কিংবা ভিডিও আপলোড না করাই ভালো। কেবল প্রাপ্তবয়স্কের জন্য প্রয়োজ্য এমন কোনো সংবেদনশীল কনটেন্ট আপলোড, শেয়ার বা ইনবক্সে পাঠাবেন না। কেউ পাঠালেও তাতে ক্লিক করবেন না।
রিকভারি ই-মেইল:
অ্যাকাউন্ট রিকভারি অপশনে মোবাইল নম্বরের পরিবর্তে ই-মেইল আইডি ব্যবহার করা উচিত। এতে কোনো কারণে অ্যাকাউন্ট হ্যাক হয়ে গেলেও ই-মেইল মারফত তার নোটিফিকেশন চলে আসবে। এমনকি চাইলে দ্রুততম সময়ে তা ঠেকানোর সুযোগও পাওয়া যাবে। যদি কোনোভাবে আপনার ফেসবুক বা টুইটার কিংবা ইনস্টাগ্রাম প্রোফাইল হ্যাক হয়ে যায়, তাহলে যত দ্রুত সম্ভব কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করুন।
This Post Has 0 Comments