ভিডিও স্ট্রিমিং প্ল্যাটফরম ইউটিউবে আপত্তিকর কমেন্টকারীদের বিরুদ্ধে এবার ব্যবস্থা নেবে প্রতিষ্ঠানটি। কুরুচিকর মন্তব্য করলেই সতর্কবার্তা…
শিক্ষার্থীদের জন্য ইন্টারনেট
নিজস্ব প্রতিবেদক, টেক এক্সপ্রেস:
বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে শিক্ষার্থীদের অনলাইনে শিক্ষা কার্যক্রম চালু রাখার স্বার্থে ‘নামমাত্র’ মূল্যে ইন্টারনেট ব্যান্ডউইথ প্রদানের সরকারি উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছে সচেতন মহল। এ পদক্ষেপ করোনা মহামারীর এই বিশেষ সময়ে উচ্চশিক্ষায় উল্লেখযোগ্য অবদান রাখবে বলে আমরা মনে করি। জানা গেছে, টেলিটক কর্তৃপক্ষ প্রতি মাসে ১০০ টাকা রিচার্জের বিনিময়ে এ সুবিধা দিতে রাজি হয়েছে।
এর ফলে দেশের পাবলিক ও প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩৯ লাখ শিক্ষার্থী নামমাত্র মূল্যে ইন্টারনেট ব্যবহারের এ সুবিধা পাবেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরাও থাকবেন এ সুবিধার আওতায়। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, শিক্ষার্থীরা জুম অ্যাপলিকেশনের মাধ্যমে অনলাইনে ক্লাসে অংশগ্রহণ করতে পারবে। এজন্য তাদের টেলিটকের নেটওয়ার্কের আওতায় থাকতে হবে।
দেশে প্রথম করোনাভাইরাস আক্রান্ত ব্যক্তি শনাক্ত হওয়ার পর সরকারের ঘোষণা অনুযায়ী গত ১৭ মার্চ থেকে সব ধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। এই সাড়ে পাঁচ মাস ধরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় শিক্ষা কার্যক্রমের ওপর এর মারাত্মক প্রভাব পড়েছে। শিক্ষাক্ষেত্রে এ স্থবিরতা কাম্য না হলেও শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যগত সুরক্ষার স্বার্থে আনুষ্ঠানিকভাবে শিক্ষা কার্যক্রম সচল করা সম্ভব হচ্ছে না। করোনা পরিস্থিতির কবে নাগাদ উন্নতি হবে, কবে খুলবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, তা এখনও অজানা। এ পরিপ্রেক্ষিতে শিক্ষা কার্যক্রম চালু করতে বিকল্প পথ খুঁজে বের করা জরুরি ছিল। অবশেষে অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রমই হয়ে উঠেছে সেই বিকল্প পথ।
বস্তুত অনেক বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ইতোমধ্যেই বিকল্প পন্থা হিসেবে অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রম চালু করেছে। এমন উদ্যোগ নেয়া হয়েছে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়েও। গত ২৫ জুন বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) আয়োজনে অনুষ্ঠিত এক ভার্চুয়াল বৈঠকে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে অনলাইনে শ্রেণি কার্যক্রম শুরু করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। কিন্তু বাজারদরে ইন্টারনেট ব্যান্ডউইথ কিনে ক্লাস করা অনেক শিক্ষার্থীর পক্ষেই সম্ভব নয়। বিষয়টি অনুধাবন করে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি শিক্ষার্থীদের জন্য বিনামূল্যে অথবা নামমাত্র মূল্যে ইন্টারনেট সেবা প্রদানের চেষ্টা চালান। অবশেষে তার এ চেষ্টা ফলপ্রসূ হয়েছে; এজন্য তিনি ধন্যবাদ পেতেই পারেন। তবে আমরা মনে করি, প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষার্থীদেরও ক্রমান্বয়ে এ সুবিধার আওতায় আনা উচিত। কারণ করোনা পরিস্থিতিতে তাদেরও শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। বস্তুত ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সব স্তরের শিক্ষাই।
আরও একটি বিষয় বিবেচনায় রাখা দরকার। অনলাইনে শিক্ষা কার্যক্রম চালানোর ক্ষেত্রে সারা দেশে উন্নত ইন্টারনেট অবকাঠামো থাকা জরুরি। অথচ দেশের অনেক স্থানে ইন্টারনেটের গতি কম। কোনো কোনো স্থানে ইন্টারনেটের সংযোগ থাকে না। অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রমকে ফলপ্রসূ করতে হলে এসব দুর্বলতা দ্রুত নিরসনের পদক্ষেপ নিতে হবে।
তাছাড়া অনেক শিক্ষক ও অধিকাংশ শিক্ষার্থীর ল্যাপটপ নেই। ল্যাপটপের বিকল্প হিসেবে স্মার্টফোনে ক্লাস করা যেতে পারে; তবে উল্লেখযোগ্যসংখ্যক শিক্ষার্থীর স্মার্টফোনও নেই।
সেক্ষেত্রে দরিদ্র শিক্ষার্থীরা যাতে শিক্ষায় পিছিয়ে না পড়ে সেদিকেও লক্ষ রাখতে হবে। আমরা চাই, ‘নামমাত্র’ মূল্যে ইন্টারনেট ব্যান্ডউইথ ব্যবহারের সুবিধা সবাই পাক, কেউ যেন এ থেকে বঞ্চিত না হয়।
This Post Has 0 Comments